আবদুল্লাহ আল মারুফ
মাহবুব আলম ভূঁইয়া বাপন। কুমিল্লার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার শুরুর দিকে দোকানি। ২০০০ সালের দিকে এই মার্কেটের দোকান নেয়ার পর থেকে ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ব্যবসা করে পেছনে ফিরতে হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় ২০১৫ সালের পর। এই মার্কেটের সামনে নির্মাণ শুরু হয় একটি রেলওয়ে ওভার পাস। এক ওভার পাসে অন্ধকারে ফেলে দেয় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজাকে। কিন্তু গত দুই বছরে বদলাচ্ছে মার্কেটটি। নতুন করে আলোর মুখ দেখছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আলোর মুখ দেখছে ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা
সোমবার দুপুর, বিকেল ও সন্ধ্যায় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতার চাপ। তবে তুলনামূলক চাপ ছিল সন্ধ্যায়। কম ক্রেতা হলেও ফিরতি পথে সবার হাতেই আছে ব্যাগ। কথা হয় ব্যবসায়ী মাহবুব আলম ভূঁইয়া বাপনের সঙ্গে। তার দোকান সিঁড়ির সামনেই। তিনি বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আগের অবস্থা বলে মাথা খারাপ করার দরকার নেই। এটা অতীত। লোকসান কত রকমে হতে পারে, তা এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বুঝেছে। কিন্তু এখন তা কিছুটা কাটছে। আলোর দিকে যাচ্ছি আমরা।
এসময় তিনি এক এক করে উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমাদের যে ক্রেতা আগে ছিলেন, তারা এখনও আছে। আমাদের নিয়মিত ক্রেতা ছিল। যারা সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের এখানকারই ক্রেতা। এই ক্রেতার সংখ্যা কম হলেও আমরা তাদের চিনি। কিন্তু এই সংখ্যাটা বাড়ছে। যারা একবার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় আসতে পারে তারা নিয়মিত হয়ে যায়। কারণ এখানে তেমন লোকসমাগম বা ছিনতাই চুরির ঘটনা নেই। আর আমাদের প্রায় দোকানেই এক দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম ও মানের অভিযোগ ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় নেই।
প্রসাধনী ব্যবসায়ী মো. খালেদ নোমান বলেন, আমাদের ক্রেতা সামান্য। কিন্তু আমরা কাউকে দামের জন্য ফেরত না দিতে চেষ্টা করি। কম লাভ হলেও আমরা পণ্য ছেড়ে দিই। এভাবে মানুষের আগ্রহও তৈরি হয়। ওই ক্রেতা আবার আসেন। তিনি অন্যজনকে নিয়ে আসেন। এভাবে আমাদের পণ্যও বেশি সেল হয়। কম লাভগুলো বেশিতে রূপ নেয়।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, লোকসান গুণলেও আমরা হতাশ ছিলাম না। কারণ আমরা জানি মানুষ ঠিকই ভালো জিনিসের প্রতি নজর দেবেই। আমাদের আশা পূরণ হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে ক্রেতা বাড়ছে। এবারের ঈদে তো আমরা অন্য মার্কেট থেকে কোন দিকেই পিছিয়ে নেই।
এসময় তিনি বলেন, যদি সড়কগুলো প্রশস্ত করা হয় এবং ফ্লাইওভারের ওঠার অংশসহ আশেপাশের এলাকায় যানজট নিরসন করা হয়, তাহলে আমাদের জন্য আরও ভালো হবে। এদিকে মানুষের নজর আরও বাড়বে।
যেভাবে অন্ধকারে যায় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন হয় কুমিল্লার শাসনগাছা রেলওয়ে ওভারপাস। ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওভারপাসটির দৈর্ঘ্য ৬৩১ দশমিক ২৯ মিটার। যেটি কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা, বাদশা মিয়া বাজার ও রেসকোর্সের ওপর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। ওভারপাসের ওই অংশে রয়েছে কুমিল্লার একসময়ের বিখ্যাত শপিংমল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা, বাদশাহ মিয়া বাজার, পাইকারি ওষুধের আড়ৎ ও শাসনগাছা বাস টার্মিনাল।
কুমিল্লার মানুষের ধারণা ছিল রেলওয়ে ওভারপাসটির কাজ শেষ হলে নগরীর চেহারা বদলে যাবে। ব্যবসা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে, কিন্তু হয়েছে তার উল্টো। বরং অন্ধকার গুহায় নিমজ্জিত হয়েছে ওই অঞ্চল। যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা কুমিল্লার রেসকোর্সে অবস্থিত। একসময় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় মার্কেটিং করতে পারাকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে ধারণা করতেন অনেকে। ক্রেতারা ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় পণ্য কিনে নিজেদের ধন্য মনে করতেন। এই মার্কেটের পণ্যের গুণগত মানের প্রশংসা ছিল শহরজুড়ে। এক রেটের একমাত্র মার্কেট ছিল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা। দিন দিন শহরের অন্যান্য অংশে মার্কেটের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অপরদিকে, ওভারপাসের নিচে চাপা পড়ে যায় মার্কেটটি।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা দোকান মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মার্কেটটিতে ২৯৫টি দোকান আছে। যার মাঝে কাপড়ের দোকান ৭০টি। আরও আছে জুতা, ঘড়ি, প্রসাধনী ও কসমেটিকসসহ নানান ধরনের দোকান। ওভারপাসের মুখের অংশ ছিল মার্কেটটি থেকে একশ মিটার পূর্বদিকে। সে সময় রাস্তা বন্ধ রেখে প্রায় তিনবছর ওভারপাসের কাজ করা হয়। ওইসময় থেকে মার্কেটটিতে ক্রেতা কমতে থাকে।
লোকসান হয় কোটি কোটি টাকা
বড় দোকানগুলো এখন ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু যেগুলো ১০ হাজার ছিল এখন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হতো। আমাদের এখানে কত কোটি টাকা লোকসান হলো ভাবুন। তাছাড়া দোকান খালিও আছে। ব্যবসাও কমে গেছে। কারণ ইস্টার্ন প্লাজা ডাউন হওয়ার পর কুমিল্লার অনেক মার্কেটের উত্থান হয়েছে।
মাহবুব আলম ভূঁইয়া বাপন। কুমিল্লার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার শুরুর দিকে দোকানি। ২০০০ সালের দিকে এই মার্কেটের দোকান নেয়ার পর থেকে ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ব্যবসা করে পেছনে ফিরতে হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় ২০১৫ সালের পর। এই মার্কেটের সামনে নির্মাণ শুরু হয় একটি রেলওয়ে ওভার পাস। এক ওভার পাসে অন্ধকারে ফেলে দেয় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজাকে। কিন্তু গত দুই বছরে বদলাচ্ছে মার্কেটটি। নতুন করে আলোর মুখ দেখছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আলোর মুখ দেখছে ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা
সোমবার দুপুর, বিকেল ও সন্ধ্যায় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতার চাপ। তবে তুলনামূলক চাপ ছিল সন্ধ্যায়। কম ক্রেতা হলেও ফিরতি পথে সবার হাতেই আছে ব্যাগ। কথা হয় ব্যবসায়ী মাহবুব আলম ভূঁইয়া বাপনের সঙ্গে। তার দোকান সিঁড়ির সামনেই। তিনি বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আগের অবস্থা বলে মাথা খারাপ করার দরকার নেই। এটা অতীত। লোকসান কত রকমে হতে পারে, তা এই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বুঝেছে। কিন্তু এখন তা কিছুটা কাটছে। আলোর দিকে যাচ্ছি আমরা।
এসময় তিনি এক এক করে উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমাদের যে ক্রেতা আগে ছিলেন, তারা এখনও আছে। আমাদের নিয়মিত ক্রেতা ছিল। যারা সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের এখানকারই ক্রেতা। এই ক্রেতার সংখ্যা কম হলেও আমরা তাদের চিনি। কিন্তু এই সংখ্যাটা বাড়ছে। যারা একবার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় আসতে পারে তারা নিয়মিত হয়ে যায়। কারণ এখানে তেমন লোকসমাগম বা ছিনতাই চুরির ঘটনা নেই। আর আমাদের প্রায় দোকানেই এক দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম ও মানের অভিযোগ ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় নেই।
প্রসাধনী ব্যবসায়ী মো. খালেদ নোমান বলেন, আমাদের ক্রেতা সামান্য। কিন্তু আমরা কাউকে দামের জন্য ফেরত না দিতে চেষ্টা করি। কম লাভ হলেও আমরা পণ্য ছেড়ে দিই। এভাবে মানুষের আগ্রহও তৈরি হয়। ওই ক্রেতা আবার আসেন। তিনি অন্যজনকে নিয়ে আসেন। এভাবে আমাদের পণ্যও বেশি সেল হয়। কম লাভগুলো বেশিতে রূপ নেয়।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, লোকসান গুণলেও আমরা হতাশ ছিলাম না। কারণ আমরা জানি মানুষ ঠিকই ভালো জিনিসের প্রতি নজর দেবেই। আমাদের আশা পূরণ হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে ক্রেতা বাড়ছে। এবারের ঈদে তো আমরা অন্য মার্কেট থেকে কোন দিকেই পিছিয়ে নেই।
এসময় তিনি বলেন, যদি সড়কগুলো প্রশস্ত করা হয় এবং ফ্লাইওভারের ওঠার অংশসহ আশেপাশের এলাকায় যানজট নিরসন করা হয়, তাহলে আমাদের জন্য আরও ভালো হবে। এদিকে মানুষের নজর আরও বাড়বে।
যেভাবে অন্ধকারে যায় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন হয় কুমিল্লার শাসনগাছা রেলওয়ে ওভারপাস। ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওভারপাসটির দৈর্ঘ্য ৬৩১ দশমিক ২৯ মিটার। যেটি কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা, বাদশা মিয়া বাজার ও রেসকোর্সের ওপর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। ওভারপাসের ওই অংশে রয়েছে কুমিল্লার একসময়ের বিখ্যাত শপিংমল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা, বাদশাহ মিয়া বাজার, পাইকারি ওষুধের আড়ৎ ও শাসনগাছা বাস টার্মিনাল।
কুমিল্লার মানুষের ধারণা ছিল রেলওয়ে ওভারপাসটির কাজ শেষ হলে নগরীর চেহারা বদলে যাবে। ব্যবসা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে, কিন্তু হয়েছে তার উল্টো। বরং অন্ধকার গুহায় নিমজ্জিত হয়েছে ওই অঞ্চল। যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা কুমিল্লার রেসকোর্সে অবস্থিত। একসময় ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় মার্কেটিং করতে পারাকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে ধারণা করতেন অনেকে। ক্রেতারা ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় পণ্য কিনে নিজেদের ধন্য মনে করতেন। এই মার্কেটের পণ্যের গুণগত মানের প্রশংসা ছিল শহরজুড়ে। এক রেটের একমাত্র মার্কেট ছিল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা। দিন দিন শহরের অন্যান্য অংশে মার্কেটের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অপরদিকে, ওভারপাসের নিচে চাপা পড়ে যায় মার্কেটটি।
ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা দোকান মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মার্কেটটিতে ২৯৫টি দোকান আছে। যার মাঝে কাপড়ের দোকান ৭০টি। আরও আছে জুতা, ঘড়ি, প্রসাধনী ও কসমেটিকসসহ নানান ধরনের দোকান। ওভারপাসের মুখের অংশ ছিল মার্কেটটি থেকে একশ মিটার পূর্বদিকে। সে সময় রাস্তা বন্ধ রেখে প্রায় তিনবছর ওভারপাসের কাজ করা হয়। ওইসময় থেকে মার্কেটটিতে ক্রেতা কমতে থাকে।
লোকসান হয় কোটি কোটি টাকা
বড় দোকানগুলো এখন ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু যেগুলো ১০ হাজার ছিল এখন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা হতো। আমাদের এখানে কত কোটি টাকা লোকসান হলো ভাবুন। তাছাড়া দোকান খালিও আছে। ব্যবসাও কমে গেছে। কারণ ইস্টার্ন প্লাজা ডাউন হওয়ার পর কুমিল্লার অনেক মার্কেটের উত্থান হয়েছে।