• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> কুমিল্লা জেলা
> আদর্শ সদর

ঈদ উপলক্ষে কুমিল্লার বাটিক পাড়ায় ব্যস্ত কারিগরেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৫: ১০
logo

ঈদ উপলক্ষে কুমিল্লার বাটিক পাড়ায় ব্যস্ত কারিগরেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৫: ১০
Photo

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই কারিগরেরা নেমে পড়েন কাজে। কেউ ব্লক করছেন, কেউ রঙতুলির আচড় দিচ্ছেন, কেউ মোমবাটিক লাগাচ্ছেন, কেউবা রঙ দিয়ে পুরো কাপড় ভিজিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ হালকা কারুকাজের ব্লক ও এমব্রয়ডারি কাজে ভীষণ মনযোগী।

ঈদ উপলক্ষে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন দারুন ব্যস্ততা বাটিক পাড়ার মালিক ও কারিগরদের। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামে গিয়্যে দেখা গেছে, এ গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে কাপড় কিনে এনে ব্লক দিয়ে বাটিকের কাপড় তৈরির কাজ। প্রতিদিন হাজার হাজার শাড়ি, থ্রি-পিচ, লুঙ্গি ও বিছানার চাদর তৈরি করছেন কারিগরেরা।

বাটিকের কাজ করে ওই গ্রামের বাসিন্দারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। ব্লক ও বাটিকের পোশাক তৈরি করায় এ গ্রামের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। গ্রামটি এখন 'বাটিকপাড়া নামেই পরিচিত। কুমিল্লার এ গ্রাম থেকেই প্রথম বুক ও বাটিকের পোশাক তৈরি শুরু হয় । ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন সড়কের বালুতুপা এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে গেলেই কমলপুর গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসতি। এ গ্রামের অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি ব্লক ও বাটিকের পেশায় রয়েছেন। গ্রামের ৪০০ থেকে ৫০০ জন লোক এ কাজে নিয়োজিত। নারী-পুরুষ ও শিশুরাও হাত বাড়িয়ে একে অন্যকে সহযোগিতা করছে। রাত দিন একাকার করে চলছে তাঁদের কাজ। ঈদ উপলক্ষে চাহিদা বেশি, তাই দম ফেলানোর সময় নেই। এর লাগোয়া দক্ষিণ আনন্দপুর এবং গলিয়ারা গ্রামেও চলছে ব্লক ও বাটিকের কাজ।

কমলপুর গ্রামের অন্তত ১৫ জন ব্লক ও বাটিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে কমলপুর গ্রামের লাল মিয়া ভারতে যান। তিনি ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরা রাজ্যে কাপড়ের মধ্যে মোম ও রঙ দিয়ে বুক তৈরির কাজ দেখে আসেন। এরপর নিজগ্রাম কমলপুরে কাপড় কিনে এনে তৈরি করেন শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, থ্রি- পিচ ও বিছানার চাদর। লাল মিয়া এখন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য। বাটিকের কাজ করেই তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। স্বাধীনতার আগে তাঁর পূর্ব পুরুষেরা খাদির কাজ করতো। তখন খন্দরের কাপড়ে হাতে ব্লক ও রঙের কাজ করা হত। উত্তরাধিকার সূত্রে লাল মিয়া এ সব পোশাক তৈরি করতে দেখেছেন। দেখাদেখি থেকেই তিনি ব্লক-বাটিকের ব্যাবসায় -বাটিকের ব্যবসায় নেমে পড়েন। নরসিংদী থেকে কাপড় এনে এর মধ্যে মোম গলিয়ে ব্লক করতেন। সঙ্গে থাকত নিপুণ কারুকাজ। লাল মিয়ার কুমিল্লা নগরের রাজগঞ্জ এলাকার হিলটাউন মার্কেটে কুমিল্লা বাটিক ঘর' নামে একটি দোকান রয়েছে। বাটিকের কাজ করে তিনি ২০৮০ শতক (৫২ কানি) জমি কেনেন। গ্রামের বাড়িতে বানিয়েছেন বিশাল অট্টালিকা। তাঁর এখানে কাজ করে বহু কারিগর এখন নিজেই এ ব্যবসায় নেমে পড়েছেন ।

স্থানীয় কারিগর জানান, 'নরসিংদী থেকে গ্রে কাপড় এনে সেই কাপড়ের মধ্যে ব্লক করা হত। কোন কোন কাপড়ে মোমবাটিক, স্কিন প্রিন্ট ও বুকের ওপর এমব্রয়ডারি করা হয়। বুকের পর দুই হাত উচ্চতার প্রতি গজ কাপড় ৭০ টাকা এবং আড়াই হাত উচ্চতার প্রতি গজ কাপড় ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। নকশা ও কাপড়ের ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ণয় করা হয়। এ গ্রামের ৪০০ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক এ কাজ করতো। নরসিংদীর পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পোশাক কিনে নিতেন। এরপর ওই পোশাক রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্রি করতেন। কমলপুর গ্রামে পোশাক কিনতে এসে তাঁরা এ গ্রামের কারিগর নামু মিয়া, তাজুল ইসলাম ও হাবিবকে নরসিংদীর ভান্ডিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁরা কাপড়ের মধ্যে ব্লকের কাজ করছেন। ব্লক-বাটিক বদলে দিয়েছে এ গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গত ২৯ জুন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কমলপুর গ্রামের আমানউল্লাহ, ইব্রাহীম খলিল, আলমগীর, রাজিব হোসেন, আবদুল জলিল, আবুল কালাম ও মোহন মিয়া এবং দক্ষিণ আনন্দপুরের সেকান্দর আলী ও মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগরেরা কাপড়ে রঙ মাখছেন, ব্লক করছেন, রোদে কাপড় শুকাচ্ছেন আবার সযতনে কাপড়ের মধ্যে নকশা করছেন। কমলপুরের মেসার্স খাদি আহাম্মদীয়া প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে বর্তমানে আহাম্মদীয়া হ্যান্ডি ডাইয়িং নাম দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আমানউল্লাহ্ (৪২) বলেন, আমার দাদা আবদুল মজিদ আগে খদ্দরের কাপড়ের ওপর ব্লকের কাজ করতেন। এরপর বাবা ফরিদ উদ্দিন খলিফা একই কাজ করতেন। ২০০১ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর আমি এবং আমার আরেক ভাই আবুল কালাম এ কাজ ধরে রাখি। নয় ভাইয়ের মধ্যে অন্য সাতজন ভিন্ন পেশায় রয়েছেন। আমার কারখানায় নরসিংদী থেকে কাপড় আনা হয়। ওই কাপড় এনে শাড়ি, থ্রি- পিচ ও বিছানার চাদর তৈরি করা হয়। কুমিল্লার বহুল প্রচলিত পূর্বাশা খাদি ঘরে আমার এখান থেকে পোশাক নেওয়া হয়। ব্লক, এ্যাম্বুস ও নানা ধরনের ডিজাইন নিজেই চিন্তাভাবনা করে বের করি। আমার কারখানায় ৩০ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক রয়েছেন। এ কারখানার শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, 'জন্মের পর থেকে আমাদের গ্রামে এ কাজ দেখে আসছি। দেখাদেখি থেকে কাজ করি।'

এখানে প্রতিটি লুঙ্গির জন্য রঙ খরচ পড়ে ৪০ টাকা করে। ওই কোম্পানী তাঁকে কাপড় দেয়। ইব্রাহীম কাপড়ের মধ্যে ব্লক ও প্রিন্টিং করে দেন। ইব্রাহীমের বাড়ির উঠান ও বাড়ির সামনের সড়কে রঙ করা লুঙ্গি শুকানো হচ্ছে। ঘরের ভেতরে মহিলারা লুঙ্গি ভাঁজ করছেন। ওই ভাঁজ করা লুঙ্গি মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে নরসিংদী নেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে বাড়তি অর্ডার রয়েছে। কুমিল্লার বাটিকের তৈরি এ লুঙ্গিই বিক্রি করছেন আমানত শাহ গ্রুপ।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, প্রায় ৫০ বছর যাবৎ আমাদের এলাকায় এ ব্যবসা চলছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিচ ও বিছানার চাদর নিচ্ছেন। এ গ্রামের ছেলে মেয়েরা দেখতে দেখতেই এ কাজ শিখেছে। এদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে আরও নতুন কিছু করতে পারবে।

কুমিল্লা খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, কমলপুর গ্রামে বহু বছর থেকেই ব্লক-বাটিকের পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা ও বড় ধরনের পুঁজি পেলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা আরও বেশি পোশাক তৈরি করতে পারবে। দিনে দিনে এ পোশাকের কদর বেড়েছে।

Thumbnail image

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই কারিগরেরা নেমে পড়েন কাজে। কেউ ব্লক করছেন, কেউ রঙতুলির আচড় দিচ্ছেন, কেউ মোমবাটিক লাগাচ্ছেন, কেউবা রঙ দিয়ে পুরো কাপড় ভিজিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ হালকা কারুকাজের ব্লক ও এমব্রয়ডারি কাজে ভীষণ মনযোগী।

ঈদ উপলক্ষে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন দারুন ব্যস্ততা বাটিক পাড়ার মালিক ও কারিগরদের। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামে গিয়্যে দেখা গেছে, এ গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে কাপড় কিনে এনে ব্লক দিয়ে বাটিকের কাপড় তৈরির কাজ। প্রতিদিন হাজার হাজার শাড়ি, থ্রি-পিচ, লুঙ্গি ও বিছানার চাদর তৈরি করছেন কারিগরেরা।

বাটিকের কাজ করে ওই গ্রামের বাসিন্দারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। ব্লক ও বাটিকের পোশাক তৈরি করায় এ গ্রামের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। গ্রামটি এখন 'বাটিকপাড়া নামেই পরিচিত। কুমিল্লার এ গ্রাম থেকেই প্রথম বুক ও বাটিকের পোশাক তৈরি শুরু হয় । ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন সড়কের বালুতুপা এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে গেলেই কমলপুর গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসতি। এ গ্রামের অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি ব্লক ও বাটিকের পেশায় রয়েছেন। গ্রামের ৪০০ থেকে ৫০০ জন লোক এ কাজে নিয়োজিত। নারী-পুরুষ ও শিশুরাও হাত বাড়িয়ে একে অন্যকে সহযোগিতা করছে। রাত দিন একাকার করে চলছে তাঁদের কাজ। ঈদ উপলক্ষে চাহিদা বেশি, তাই দম ফেলানোর সময় নেই। এর লাগোয়া দক্ষিণ আনন্দপুর এবং গলিয়ারা গ্রামেও চলছে ব্লক ও বাটিকের কাজ।

কমলপুর গ্রামের অন্তত ১৫ জন ব্লক ও বাটিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে কমলপুর গ্রামের লাল মিয়া ভারতে যান। তিনি ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরা রাজ্যে কাপড়ের মধ্যে মোম ও রঙ দিয়ে বুক তৈরির কাজ দেখে আসেন। এরপর নিজগ্রাম কমলপুরে কাপড় কিনে এনে তৈরি করেন শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, থ্রি- পিচ ও বিছানার চাদর। লাল মিয়া এখন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য। বাটিকের কাজ করেই তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। স্বাধীনতার আগে তাঁর পূর্ব পুরুষেরা খাদির কাজ করতো। তখন খন্দরের কাপড়ে হাতে ব্লক ও রঙের কাজ করা হত। উত্তরাধিকার সূত্রে লাল মিয়া এ সব পোশাক তৈরি করতে দেখেছেন। দেখাদেখি থেকেই তিনি ব্লক-বাটিকের ব্যাবসায় -বাটিকের ব্যবসায় নেমে পড়েন। নরসিংদী থেকে কাপড় এনে এর মধ্যে মোম গলিয়ে ব্লক করতেন। সঙ্গে থাকত নিপুণ কারুকাজ। লাল মিয়ার কুমিল্লা নগরের রাজগঞ্জ এলাকার হিলটাউন মার্কেটে কুমিল্লা বাটিক ঘর' নামে একটি দোকান রয়েছে। বাটিকের কাজ করে তিনি ২০৮০ শতক (৫২ কানি) জমি কেনেন। গ্রামের বাড়িতে বানিয়েছেন বিশাল অট্টালিকা। তাঁর এখানে কাজ করে বহু কারিগর এখন নিজেই এ ব্যবসায় নেমে পড়েছেন ।

স্থানীয় কারিগর জানান, 'নরসিংদী থেকে গ্রে কাপড় এনে সেই কাপড়ের মধ্যে ব্লক করা হত। কোন কোন কাপড়ে মোমবাটিক, স্কিন প্রিন্ট ও বুকের ওপর এমব্রয়ডারি করা হয়। বুকের পর দুই হাত উচ্চতার প্রতি গজ কাপড় ৭০ টাকা এবং আড়াই হাত উচ্চতার প্রতি গজ কাপড় ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। নকশা ও কাপড়ের ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ণয় করা হয়। এ গ্রামের ৪০০ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক এ কাজ করতো। নরসিংদীর পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পোশাক কিনে নিতেন। এরপর ওই পোশাক রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্রি করতেন। কমলপুর গ্রামে পোশাক কিনতে এসে তাঁরা এ গ্রামের কারিগর নামু মিয়া, তাজুল ইসলাম ও হাবিবকে নরসিংদীর ভান্ডিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁরা কাপড়ের মধ্যে ব্লকের কাজ করছেন। ব্লক-বাটিক বদলে দিয়েছে এ গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গত ২৯ জুন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কমলপুর গ্রামের আমানউল্লাহ, ইব্রাহীম খলিল, আলমগীর, রাজিব হোসেন, আবদুল জলিল, আবুল কালাম ও মোহন মিয়া এবং দক্ষিণ আনন্দপুরের সেকান্দর আলী ও মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কারিগরেরা কাপড়ে রঙ মাখছেন, ব্লক করছেন, রোদে কাপড় শুকাচ্ছেন আবার সযতনে কাপড়ের মধ্যে নকশা করছেন। কমলপুরের মেসার্স খাদি আহাম্মদীয়া প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে বর্তমানে আহাম্মদীয়া হ্যান্ডি ডাইয়িং নাম দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আমানউল্লাহ্ (৪২) বলেন, আমার দাদা আবদুল মজিদ আগে খদ্দরের কাপড়ের ওপর ব্লকের কাজ করতেন। এরপর বাবা ফরিদ উদ্দিন খলিফা একই কাজ করতেন। ২০০১ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর আমি এবং আমার আরেক ভাই আবুল কালাম এ কাজ ধরে রাখি। নয় ভাইয়ের মধ্যে অন্য সাতজন ভিন্ন পেশায় রয়েছেন। আমার কারখানায় নরসিংদী থেকে কাপড় আনা হয়। ওই কাপড় এনে শাড়ি, থ্রি- পিচ ও বিছানার চাদর তৈরি করা হয়। কুমিল্লার বহুল প্রচলিত পূর্বাশা খাদি ঘরে আমার এখান থেকে পোশাক নেওয়া হয়। ব্লক, এ্যাম্বুস ও নানা ধরনের ডিজাইন নিজেই চিন্তাভাবনা করে বের করি। আমার কারখানায় ৩০ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক রয়েছেন। এ কারখানার শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, 'জন্মের পর থেকে আমাদের গ্রামে এ কাজ দেখে আসছি। দেখাদেখি থেকে কাজ করি।'

এখানে প্রতিটি লুঙ্গির জন্য রঙ খরচ পড়ে ৪০ টাকা করে। ওই কোম্পানী তাঁকে কাপড় দেয়। ইব্রাহীম কাপড়ের মধ্যে ব্লক ও প্রিন্টিং করে দেন। ইব্রাহীমের বাড়ির উঠান ও বাড়ির সামনের সড়কে রঙ করা লুঙ্গি শুকানো হচ্ছে। ঘরের ভেতরে মহিলারা লুঙ্গি ভাঁজ করছেন। ওই ভাঁজ করা লুঙ্গি মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে নরসিংদী নেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে বাড়তি অর্ডার রয়েছে। কুমিল্লার বাটিকের তৈরি এ লুঙ্গিই বিক্রি করছেন আমানত শাহ গ্রুপ।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, প্রায় ৫০ বছর যাবৎ আমাদের এলাকায় এ ব্যবসা চলছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিচ ও বিছানার চাদর নিচ্ছেন। এ গ্রামের ছেলে মেয়েরা দেখতে দেখতেই এ কাজ শিখেছে। এদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে আরও নতুন কিছু করতে পারবে।

কুমিল্লা খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, কমলপুর গ্রামে বহু বছর থেকেই ব্লক-বাটিকের পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা ও বড় ধরনের পুঁজি পেলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা আরও বেশি পোশাক তৈরি করতে পারবে। দিনে দিনে এ পোশাকের কদর বেড়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

হাসনাত আব্দুল্লাহর ঈদ শুভেচ্ছার ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে বিএনপি সমর্থকরা

২

দেবীদ্বারে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, ঈদের আনন্দ শেষ পুরো পরিবারের

৩

কুমিল্লার কোথায় কখন ঈদের নামাজ

৪

কোরবানি ঈদেও কুমিল্লায় নির্বাচনী প্রচারণা

৫

নিজ এলাকায় শহীদ, আহতদের নিয়ে ঈদ ও কোরবানি করবেন- হাসনাত

সম্পর্কিত

হাসনাত আব্দুল্লাহর ঈদ শুভেচ্ছার ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে বিএনপি সমর্থকরা

হাসনাত আব্দুল্লাহর ঈদ শুভেচ্ছার ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে বিএনপি সমর্থকরা

১৭ ঘণ্টা আগে
দেবীদ্বারে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, ঈদের আনন্দ শেষ পুরো পরিবারের

দেবীদ্বারে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, ঈদের আনন্দ শেষ পুরো পরিবারের

১৭ ঘণ্টা আগে
কুমিল্লার কোথায় কখন ঈদের নামাজ

কুমিল্লার কোথায় কখন ঈদের নামাজ

১ দিন আগে
কোরবানি ঈদেও কুমিল্লায় নির্বাচনী প্রচারণা

কোরবানি ঈদেও কুমিল্লায় নির্বাচনী প্রচারণা

২ দিন আগে