আবদুল্লাহ আল মারুফ
কুমিল্লা। দেশের অন্যতম জনবহুল শহর। বলা হয়, ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষের বসবাস এই নগরে। আর নগরের বেশির ভাগ এলাকায় নেই প্রশস্ত সড়ক। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেও সময় লাগে। তাই অন্যসব শহরের তুলনায় কুমিল্লা নগর অগ্নি ঝুঁকিতে বেশি।
কুমিল্লা নগরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গ্রামের তুলনায় কুমিল্লা শহরের অগ্নিঝুঁকি কয়েকগুণ বেশি। কারণ শহরের ভবনগুলো গ্রামের তুলনায় খুবই ঘেঁষা। যা নিয়মের বাইরে গিয়েও নির্মাণ করা। এ কারণে শহর গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত হিসেবে। এখনও মনগড়াভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে ভবনের পর ভবন।
নগরের কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, রাজগঞ্জ, মনোহরপুর, পানপট্টি, তেরিপট্টি ও আশপাশের এলাকা, ঠাকুরপাড়া, টমছমব্রিজ, মোঘলটুলি, রেলস্টেশন, শাসনগাছা, চৌধুরীপাড়া, গর্জনখোলা, শহর লাগোয়া ধর্মপুর, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া এলাকার বেশির ভাগের নেই প্রশস্ত সড়ক। এতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলের পাশে গেলেও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগে। কখনও তা ঘণ্টাখানেকও লাগতে পারে। তখন আগুন নেভাতেও সময় প্রয়োজন হয়।
এদিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নগরের কেন্দ্রস্থল কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, চকবাজার, নিউমার্কেট, ছাতিপট্টিসহ আশপাশের এলাকা। এসব এলাকায় গাড়ি তো দূরে, মানুষও হাঁটা দুষ্কর।
নগরের রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা তানভীর দীপু বলেন, ফায়ার সার্ভিস যদি ঘটনাস্থলে যায়, তাহলে তো আগুন নেভাতে পারবে। যদি যেতে না পারে, তাহলে কীভাবে আগুন নেভাবে? ব্যবসায়িক কারণে এ নগর গুরুত্ব বহুকাল ধরে আছে। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা কতটা উন্নত হয়েছে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
দীপু বলেন, এ শহরের সড়কের কোনও প্রশস্ততা নেই। যা আছে তাও আবার দখল। যেখানে মানুষই হাঁটতে বেগ পায়, সেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কীভাবে যাবে! তাছাড়া গলির পর গলি এ শহরের মানুষকে আতঙ্কিত করছে দিন দিন। একবার আগুন লাগলে কীভাবে নেভাবে, তা কেউ জানে না। কুমিল্লায় শিগগিরই পরিকল্পিত নগরায়ণ প্রয়োজন। না হয় যে কোনও সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। আর ১২ তলার থেকে বেশি উঁচু ভবন আছে। সেগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, তা বুঝেই আসে না।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, কুমিল্লা এখন অন্যতম অগ্নিঝুঁকির শহর। তারা বলছে, এর নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ। অতিরিক্ত জনসংখ্যা, সরু রাস্তা ও গলি, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যানজট, সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার, পুকুর ও দিঘি ভরাট, পানির উৎস না থাকা, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, ফায়ার সার্ভিসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকা।
সূত্র আরও বলছে, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মাত্র ১৩টিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে। বাকি উপজেলাগুলোয় ফায়ার স্টেশন স্থাপনের চেষ্টা চলছে। যেগুলোতে আছে, সম্পূর্ণ সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার সব স্টেশনে আছে জনবল-সংকট ও পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদির সংকট। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে সংকট ও প্রতিকূলতা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ভবন নির্মাণ আইন অনুযায়ী ভবনের পাশে ৫ ফুট করে খালি রাখতে হবে। এ ছাড়া ভবনের সামনে ২০ ফুট জায়গা রাখতে হবে। কিন্তু বেশির ভাগ ভবনে তা নেই।
কুমিল্লা শহরের জন্য ফায়ার সার্ভিসে দুটি থাকলেও সচল আছে একটি ওয়াটার টেন্ডার (পানিবাহী গাড়ি) এবং আরও তিন অনুমোদন হয়েছে। শহরের জন্য একটি স্নোরকেল অনুমোদন হলেও তা নেই। এটি বহুতল ভবনের আগুন নেভানোর মেশিন। ২০ লাখ মানুষের এই শহরের জন্য সচল আছে একটি মাত্র টার্নটেবললেডার গাড়ি (টিটিএল)। যা দিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নেভানো যায়। গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে নেই পাম্পটানার গাড়ি টোরিংভেহিক্যাল। যে কারণে প্রায় সমস্যায় পড়তে হয় এই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের।
ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লা সদরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমাদের এখানে মাত্র ২৯জন ফায়ার ফাইটার আছে। আমাদের ৪০জন প্রয়োজন। এছাড়াও আমাদের অনেক মেশিন দরকার, যা আমরা চাহিদা দিলেও আমাদের দেয়া হয়নি। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রের অপেক্ষা ছাড়া উপায় থাকবে না।
অগ্নিকাণ্ডে কুমিল্লার ফায়ার সার্ভিসের চ্যালেঞ্জ কী, এমন প্রশ্নে কুমিল্লার ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (কুমিল্লা) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, কুমিল্লা স্টেশনে ৭ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। আমরা এখন নতুন মেশিন যুক্ত করেছি, যা দিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নেভানো ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তবে এই শহরে ১২তলার ওপরেও ভবন আছে। ১২ তলার ওপরের ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এখনও আমাদের কাছে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে আমরা সরঞ্জামের জন্য আবেদন করেছি। এ ছাড়া যদি দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা খবর পাই অবশ্যই আমরা সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। এসময় তিনি যুক্ত করেন, ১২ তলা পর্যন্ত আমারে সক্ষমতা থাকলেও আরও গুরুত্বপূর্ণ সময় এরচেয়ে বেশি তলা ওপরে বিভিন্ন টেকনিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করি।
কুমিল্লা। দেশের অন্যতম জনবহুল শহর। বলা হয়, ধারণক্ষমতার তিনগুণ মানুষের বসবাস এই নগরে। আর নগরের বেশির ভাগ এলাকায় নেই প্রশস্ত সড়ক। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেও সময় লাগে। তাই অন্যসব শহরের তুলনায় কুমিল্লা নগর অগ্নি ঝুঁকিতে বেশি।
কুমিল্লা নগরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গ্রামের তুলনায় কুমিল্লা শহরের অগ্নিঝুঁকি কয়েকগুণ বেশি। কারণ শহরের ভবনগুলো গ্রামের তুলনায় খুবই ঘেঁষা। যা নিয়মের বাইরে গিয়েও নির্মাণ করা। এ কারণে শহর গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত হিসেবে। এখনও মনগড়াভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে ভবনের পর ভবন।
নগরের কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, রাজগঞ্জ, মনোহরপুর, পানপট্টি, তেরিপট্টি ও আশপাশের এলাকা, ঠাকুরপাড়া, টমছমব্রিজ, মোঘলটুলি, রেলস্টেশন, শাসনগাছা, চৌধুরীপাড়া, গর্জনখোলা, শহর লাগোয়া ধর্মপুর, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া এলাকার বেশির ভাগের নেই প্রশস্ত সড়ক। এতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলের পাশে গেলেও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগে। কখনও তা ঘণ্টাখানেকও লাগতে পারে। তখন আগুন নেভাতেও সময় প্রয়োজন হয়।
এদিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নগরের কেন্দ্রস্থল কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, চকবাজার, নিউমার্কেট, ছাতিপট্টিসহ আশপাশের এলাকা। এসব এলাকায় গাড়ি তো দূরে, মানুষও হাঁটা দুষ্কর।
নগরের রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা তানভীর দীপু বলেন, ফায়ার সার্ভিস যদি ঘটনাস্থলে যায়, তাহলে তো আগুন নেভাতে পারবে। যদি যেতে না পারে, তাহলে কীভাবে আগুন নেভাবে? ব্যবসায়িক কারণে এ নগর গুরুত্ব বহুকাল ধরে আছে। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা কতটা উন্নত হয়েছে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
দীপু বলেন, এ শহরের সড়কের কোনও প্রশস্ততা নেই। যা আছে তাও আবার দখল। যেখানে মানুষই হাঁটতে বেগ পায়, সেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি কীভাবে যাবে! তাছাড়া গলির পর গলি এ শহরের মানুষকে আতঙ্কিত করছে দিন দিন। একবার আগুন লাগলে কীভাবে নেভাবে, তা কেউ জানে না। কুমিল্লায় শিগগিরই পরিকল্পিত নগরায়ণ প্রয়োজন। না হয় যে কোনও সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। আর ১২ তলার থেকে বেশি উঁচু ভবন আছে। সেগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, তা বুঝেই আসে না।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, কুমিল্লা এখন অন্যতম অগ্নিঝুঁকির শহর। তারা বলছে, এর নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ। অতিরিক্ত জনসংখ্যা, সরু রাস্তা ও গলি, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যানজট, সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার, পুকুর ও দিঘি ভরাট, পানির উৎস না থাকা, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, ফায়ার সার্ভিসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকা।
সূত্র আরও বলছে, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মাত্র ১৩টিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে। বাকি উপজেলাগুলোয় ফায়ার স্টেশন স্থাপনের চেষ্টা চলছে। যেগুলোতে আছে, সম্পূর্ণ সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার সব স্টেশনে আছে জনবল-সংকট ও পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদির সংকট। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে সংকট ও প্রতিকূলতা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ভবন নির্মাণ আইন অনুযায়ী ভবনের পাশে ৫ ফুট করে খালি রাখতে হবে। এ ছাড়া ভবনের সামনে ২০ ফুট জায়গা রাখতে হবে। কিন্তু বেশির ভাগ ভবনে তা নেই।
কুমিল্লা শহরের জন্য ফায়ার সার্ভিসে দুটি থাকলেও সচল আছে একটি ওয়াটার টেন্ডার (পানিবাহী গাড়ি) এবং আরও তিন অনুমোদন হয়েছে। শহরের জন্য একটি স্নোরকেল অনুমোদন হলেও তা নেই। এটি বহুতল ভবনের আগুন নেভানোর মেশিন। ২০ লাখ মানুষের এই শহরের জন্য সচল আছে একটি মাত্র টার্নটেবললেডার গাড়ি (টিটিএল)। যা দিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নেভানো যায়। গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে নেই পাম্পটানার গাড়ি টোরিংভেহিক্যাল। যে কারণে প্রায় সমস্যায় পড়তে হয় এই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের।
ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লা সদরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমাদের এখানে মাত্র ২৯জন ফায়ার ফাইটার আছে। আমাদের ৪০জন প্রয়োজন। এছাড়াও আমাদের অনেক মেশিন দরকার, যা আমরা চাহিদা দিলেও আমাদের দেয়া হয়নি। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রের অপেক্ষা ছাড়া উপায় থাকবে না।
অগ্নিকাণ্ডে কুমিল্লার ফায়ার সার্ভিসের চ্যালেঞ্জ কী, এমন প্রশ্নে কুমিল্লার ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (কুমিল্লা) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, কুমিল্লা স্টেশনে ৭ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। আমরা এখন নতুন মেশিন যুক্ত করেছি, যা দিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত ভবনের আগুন নেভানো ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তবে এই শহরে ১২তলার ওপরেও ভবন আছে। ১২ তলার ওপরের ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এখনও আমাদের কাছে কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে আমরা সরঞ্জামের জন্য আবেদন করেছি। এ ছাড়া যদি দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা খবর পাই অবশ্যই আমরা সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। এসময় তিনি যুক্ত করেন, ১২ তলা পর্যন্ত আমারে সক্ষমতা থাকলেও আরও গুরুত্বপূর্ণ সময় এরচেয়ে বেশি তলা ওপরে বিভিন্ন টেকনিকে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করি।