কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও দমন-পীড়নের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের এই কমিটির দুইজনই বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা।
গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩ তম সিন্ডিকেট সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ফ্যাসিস্টের লিস্ট করতে ওই শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান খান ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী মোর্শেদ কাজেম।
দুজনই বঙ্গবন্ধু পরিষদের কোষাধ্যক্ষ পদধারী নেতা ছিলেন।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সকল ছাত্র শিক্ষকরা হত্যা যখম, নির্যাতন-নিপীড়ন, চিকিৎসা পদানে বাধা দান, ধর্ষণের হুমকিদাতা ও উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ সত্যায়িত কপি প্রেরণের জন্য নির্দেশনা দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রক্টর আব্দুল হাকিমকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান খান, সদস্য সচিব আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী মোর্শেদ কাজেম।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান খান ২০২২ বঙ্গবন্ধু পরিষদের শিক্ষা গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে আলী মোর্শেদ কাজেম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু পরিষদের একজন বলেন, মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়। মাহমুদুল হাসান খান স্যার ও কাজেম এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সরকার পরিবর্তন হতে না হতেই তারা তাদের নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন। তারাও তো স্বৈরাচারের দোসর।
এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান বলেন, এখন প্রশাসন কেন মনে করল আমাকে দিতে এটি প্রশাসনের প্রশ্ন। আমি তো বলিনি আমাকে রাখতে।
মু. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুটিকয়েক শিক্ষক ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। বিভিন্ন পরিষদ, সমিতির সাথে যুক্ত ছিল। এটা ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক। ধারণ করে হোক বা না করে হোক। তবে, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে ছিলাম না।'
এ বিষয়ে জুলাই আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সাকিব হোসাইন জানান, শুনতে পেরেছি বিগত আমলে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের শনাক্ত করতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন কিছু হওয়া মানে ফ্যাসিস্টদের সহচরদের নতুন করে সুযোগ করে দেওয়া। আমরা চাই ফ্যাসিস্টদের সনাক্ত করতে ফ্যাসিজম থেকে দূরে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হোক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফ্যাসিস্টদের নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া শিক্ষক ছাত্রদের বিষয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ে জেনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রশাসন শুরু থেকেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্ব দিচ্ছেন। আমরা প্রমাণসহ প্রিন্ট করে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি, বেশ কয়েকবার দেখাও করেছি। কিন্তু ভিসি কর্ণপাত করেনি।
এ বিষয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফসা আক্তার জানান, স্বৈরাচার বিদায় হলেও বিভিন্ন সেক্টরে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আওয়ামী স্বৈরাচারদের পুনর্বাসন করতে চায় সেটা দুঃখজনক বটেই। আমরা তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে কমিটি থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাদের সরানোর দাবি জানাচ্ছি।
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে যেহেতু তারা (আওয়ামীপন্থী শিক্ষক) আছেন তাহলে তো তারা আরও সহজে জড়িতদের বের করতে পারবেন। আর আমরা আসলে স্বচ্ছতার জন্য একটি কমিটি করেছি। আইন, বিধি ঠিকঠাকভাবে দেখতে আইন বিভাগের শিক্ষকও রেখেছি। পাশাপাশি, প্রশাসনও নজর রাখবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে জড়িত। এখন আমরা বিগত সরকারের রাজনীতি না করা লোকেদের কীভাবে খুঁজে পাব? আরেকটি বিষয় কমিটিটি সিন্ডিকেটে সকলের মতামতের ভিত্তিতে হয়েছে। এখন এই কমিটিটি নিয়ে কোনো অবজেকশন থাকলে আমরা আগামী সিন্ডিকেটে আবারও কথা বলব।
বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে জড়িতদের নিয়ে কমিটির প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা থাকবে কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে চরমভাবে স্বচ্ছতা হারাবে। আমরা চেষ্টা করব আগামী সিন্ডিকেটে এটি নিয়ে কথা বলার।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও দমন-পীড়নের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের এই কমিটির দুইজনই বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা।
গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩ তম সিন্ডিকেট সভায় এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ফ্যাসিস্টের লিস্ট করতে ওই শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান খান ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী মোর্শেদ কাজেম।
দুজনই বঙ্গবন্ধু পরিষদের কোষাধ্যক্ষ পদধারী নেতা ছিলেন।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সকল ছাত্র শিক্ষকরা হত্যা যখম, নির্যাতন-নিপীড়ন, চিকিৎসা পদানে বাধা দান, ধর্ষণের হুমকিদাতা ও উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ সত্যায়িত কপি প্রেরণের জন্য নির্দেশনা দেয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রক্টর আব্দুল হাকিমকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান খান, সদস্য সচিব আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী মোর্শেদ কাজেম।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান খান ২০২২ বঙ্গবন্ধু পরিষদের শিক্ষা গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে আলী মোর্শেদ কাজেম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু পরিষদের একজন বলেন, মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়। মাহমুদুল হাসান খান স্যার ও কাজেম এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সরকার পরিবর্তন হতে না হতেই তারা তাদের নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন। তারাও তো স্বৈরাচারের দোসর।
এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান বলেন, এখন প্রশাসন কেন মনে করল আমাকে দিতে এটি প্রশাসনের প্রশ্ন। আমি তো বলিনি আমাকে রাখতে।
মু. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুটিকয়েক শিক্ষক ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। বিভিন্ন পরিষদ, সমিতির সাথে যুক্ত ছিল। এটা ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক। ধারণ করে হোক বা না করে হোক। তবে, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে ছিলাম না।'
এ বিষয়ে জুলাই আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সাকিব হোসাইন জানান, শুনতে পেরেছি বিগত আমলে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের শনাক্ত করতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন কিছু হওয়া মানে ফ্যাসিস্টদের সহচরদের নতুন করে সুযোগ করে দেওয়া। আমরা চাই ফ্যাসিস্টদের সনাক্ত করতে ফ্যাসিজম থেকে দূরে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হোক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফ্যাসিস্টদের নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া শিক্ষক ছাত্রদের বিষয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ে জেনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রশাসন শুরু থেকেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্ব দিচ্ছেন। আমরা প্রমাণসহ প্রিন্ট করে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি, বেশ কয়েকবার দেখাও করেছি। কিন্তু ভিসি কর্ণপাত করেনি।
এ বিষয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফসা আক্তার জানান, স্বৈরাচার বিদায় হলেও বিভিন্ন সেক্টরে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আওয়ামী স্বৈরাচারদের পুনর্বাসন করতে চায় সেটা দুঃখজনক বটেই। আমরা তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে কমিটি থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাদের সরানোর দাবি জানাচ্ছি।
রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে যেহেতু তারা (আওয়ামীপন্থী শিক্ষক) আছেন তাহলে তো তারা আরও সহজে জড়িতদের বের করতে পারবেন। আর আমরা আসলে স্বচ্ছতার জন্য একটি কমিটি করেছি। আইন, বিধি ঠিকঠাকভাবে দেখতে আইন বিভাগের শিক্ষকও রেখেছি। পাশাপাশি, প্রশাসনও নজর রাখবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকই বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে জড়িত। এখন আমরা বিগত সরকারের রাজনীতি না করা লোকেদের কীভাবে খুঁজে পাব? আরেকটি বিষয় কমিটিটি সিন্ডিকেটে সকলের মতামতের ভিত্তিতে হয়েছে। এখন এই কমিটিটি নিয়ে কোনো অবজেকশন থাকলে আমরা আগামী সিন্ডিকেটে আবারও কথা বলব।
বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে জড়িতদের নিয়ে কমিটির প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা থাকবে কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে চরমভাবে স্বচ্ছতা হারাবে। আমরা চেষ্টা করব আগামী সিন্ডিকেটে এটি নিয়ে কথা বলার।