আবদুল্লাহ আল মারুফ
বাতাসে দুলছে গোলাপ। একফুল থেকে অন্য ফুলে উড়ে এসে বসছে ভ্রমর। পাশেই কসমস ফুল সূর্যের মতো মেলে আছে তার পাখনা। ঘাসে ঘাসে লাফাচ্ছে ফড়িং। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ফয়জুন্নেসা হলের ৫ নম্বর ভবনের সামনের চিত্র এটি। কিন্তু ভিন্ন চিত্র তার আরেক পাশে। এক, দুই ও তিন নম্বর ভবনের সামনে স্তূপ করা বালু ও কংক্রিট। জরাজীর্ণ দুই নম্বর ভবন যেন ভূতের আস্তানা!
গতকাল রোববার দুপুরে হলটি ঘুরে দেখা গেছে, হলের ভেতর রয়েছে একটি প্রভোস্ট কার্যালয় ও পাঁচটি আবাসিক ভবন। যেগুলোর একটি ভবন পরিত্যক্ত। আর বাকি পাঁচ ভবনের এক নম্বরটিতে ৪৯জন, তিন নম্বরটিতে ১০৮, চার নম্বরটিতে ১১০ ও পাঁচ নম্বরটিতে ১২৪ জন ছাত্রী রয়েছেন। এর বাইরে দুইনম্বর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে অন্য ভবনে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চারটি ভবনে রয়েছেন ৩৯১জন শিক্ষার্থী। এসব ভবনে আসন সংখ্যা ৪০৪টি। খালি রয়েছে ১৩টি। যা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়াতে সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও পুরো হোস্টেলের পরিত্যক্ত ভবন ছাড়াও আরও শতাধিক সিট শুধুই সংস্কারের অভাবে খালি পড়ে আছে।
হলের পানিতে গোসল করে অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা
হোস্টেলের তিন নম্বর ভবনের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোস্টেলের ওয়াশরুমের পানি ও ট্যাবের পানি ব্যবহারে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, পানি ব্যবহারে চর্মরোগের সৃষ্টির পাশাপাশি অনেকে হাসপাতালেও যেতে হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের অনেকে ওই ভবন ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের ৩ নম্বর ভবনের বাসিন্দা দিনা আক্তার বলেন, আমরা ৫ নম্বর ভবন আর অন্যসব ভবনের কোন মিল দেখি না। যদিও এটা নিয়ে আমাদের তেমন মন খারাপ নেই। কিন্তু আমরা কিছু কমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। যেমন ৩ নম্বর ভবনের পানি ব্যবহারে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে স্ক্রিনে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে হাসপাতালে যাচ্ছেন। আবার অনেকে ওই ভবন ছেড়ে যাচ্ছেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা স্যারকে জানিয়েছি। স্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
হল প্রভোস্ট ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. নূরু নবী বলেন, হোস্টেলের যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন অনেক সমস্যা ছিল। লাইট ছিল না, ওয়াশরুমে পানি জমে থাকত, সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। এছাড়াও নানান ছোটখাট সমস্যা। যেগুলো আমি এসেই ঠিক করে দিয়েছি। পানির সমস্যা নিয়ে আমি শুনেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে। এটা অনেক আগের সমস্যা। এছাড়া এখন তেমন কোন সমস্যা নেই। অধ্যক্ষ স্যার হোস্টেলের বিষয়ে খুবই আন্তরিক। সামান্য যেসব সমস্যা আছে আমরা তা স্যারের সাথে শেয়ার করেছি। এখানে অনেক আর্থিক বাজেটের ব্যাপার আছে। স্যার বিষয়টি নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
পানির সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেকবার এই পানির পাম্পটি পরিবর্তন করে দেখেছি। সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তবে আমরা শিগগিরই অন্য ভবনগুলোর পাম্প থেকে পানি এনে তা ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি। এটা হলে আমাদের সন্তানরা আশা করি আর সমস্যার সম্মুখীন হবে না।
একপাশে স্বর্গ
হল সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি ভবনের সবশেষটির কাজ শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। এই ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর সেখানে যুক্ত হয় উন্নতমানের সব কিছু। ভবনে আছে সিলিং ফ্যান থেকে উন্নতমানের পানি ও টিভিরুমের ব্যবস্থা। ভবনের সামনে আছে ফুলের বাগান। এই ভবনের পরিচ্ছন্ন দেয়ালের রঙ দূর থেকেও অনায়াসে বোঝা যায়। এছাড়াও ভবনটির পাশের নিরাপত্তা দেয়ালও অন্যসবকটি থেকে উন্নত। তাছাড়া ভবনের সামনের বাদামতলার বসার সিটে রাতেও শিক্ষার্থীদের গল্প করার কথা শোনা যায়।
তাই হলের শিক্ষার্থীদের পছন্দের ভবন ৫ নম্বরটি। যেখানে এসে সবাই আড্ডা ও খোশ গল্পে মেতে ওঠেন।
নরক অন্যপাশে
জানা গেছে, পাঁচ নম্বর ভবন ছাড়া সবকটি ভবন নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকের। একনম্বর ভবনের নিচতলার কোন কক্ষে নেই শিক্ষার্থী। পোকামাকড়ের বাসা আর কাদামাটি ছাড়া এই ভবনের নিচতলায় কিছুই নেই। ভবনের কিছু জানালার কাঁচও ভাঙা। দুই নম্বর ভবনটি গতবছরের জুন মাসে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে খালি করা হয়েছে। যেকারণে ছাত্রীদের বাসযোগ্য আসনের সংখ্যা কমে এসেছে। তিন নম্বর ভবনের নিচতলায় চলছে সংস্কার কাজ। দেয়ালের কোন কোন অংশ ভাঙা। নেই পড়ার ভালো কোন কক্ষ। জানালার গ্রিলে মরিচা। যে কারণে নিচতলার দেয়াল ও ফ্লোর ছাত্রীদের থাকার উপযুক্ত নয়।
তাই গত ৫ বছর ধরে এই ভবনের নিচতলায় কোন শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা নেই। চার নম্বর ভবনের অবস্থাও একইরকম। কোথাও কোথাও ঝুলে আছে বৈদ্যুতিক তার। স্যাঁতসেঁতে ফ্লোরে বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। সামান্য বৃষ্টিতে পানি হয়ে যাওয়ায় আশপাশের জঙ্গল থেকে সাপ এসে প্রবেশ করে এই ভবনে। যে কারণে এই ভবনের নিচতলায় অস্থায়ীভাবে মাত্র দুই কক্ষে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বাকি কক্ষগুলো ফাঁকাই থাকে।
বাতাসে দুলছে গোলাপ। একফুল থেকে অন্য ফুলে উড়ে এসে বসছে ভ্রমর। পাশেই কসমস ফুল সূর্যের মতো মেলে আছে তার পাখনা। ঘাসে ঘাসে লাফাচ্ছে ফড়িং। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ফয়জুন্নেসা হলের ৫ নম্বর ভবনের সামনের চিত্র এটি। কিন্তু ভিন্ন চিত্র তার আরেক পাশে। এক, দুই ও তিন নম্বর ভবনের সামনে স্তূপ করা বালু ও কংক্রিট। জরাজীর্ণ দুই নম্বর ভবন যেন ভূতের আস্তানা!
গতকাল রোববার দুপুরে হলটি ঘুরে দেখা গেছে, হলের ভেতর রয়েছে একটি প্রভোস্ট কার্যালয় ও পাঁচটি আবাসিক ভবন। যেগুলোর একটি ভবন পরিত্যক্ত। আর বাকি পাঁচ ভবনের এক নম্বরটিতে ৪৯জন, তিন নম্বরটিতে ১০৮, চার নম্বরটিতে ১১০ ও পাঁচ নম্বরটিতে ১২৪ জন ছাত্রী রয়েছেন। এর বাইরে দুইনম্বর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে অন্য ভবনে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চারটি ভবনে রয়েছেন ৩৯১জন শিক্ষার্থী। এসব ভবনে আসন সংখ্যা ৪০৪টি। খালি রয়েছে ১৩টি। যা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়াতে সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও পুরো হোস্টেলের পরিত্যক্ত ভবন ছাড়াও আরও শতাধিক সিট শুধুই সংস্কারের অভাবে খালি পড়ে আছে।
হলের পানিতে গোসল করে অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা
হোস্টেলের তিন নম্বর ভবনের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোস্টেলের ওয়াশরুমের পানি ও ট্যাবের পানি ব্যবহারে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, পানি ব্যবহারে চর্মরোগের সৃষ্টির পাশাপাশি অনেকে হাসপাতালেও যেতে হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের অনেকে ওই ভবন ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের ৩ নম্বর ভবনের বাসিন্দা দিনা আক্তার বলেন, আমরা ৫ নম্বর ভবন আর অন্যসব ভবনের কোন মিল দেখি না। যদিও এটা নিয়ে আমাদের তেমন মন খারাপ নেই। কিন্তু আমরা কিছু কমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। যেমন ৩ নম্বর ভবনের পানি ব্যবহারে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে স্ক্রিনে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে হাসপাতালে যাচ্ছেন। আবার অনেকে ওই ভবন ছেড়ে যাচ্ছেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা স্যারকে জানিয়েছি। স্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
হল প্রভোস্ট ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. নূরু নবী বলেন, হোস্টেলের যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন অনেক সমস্যা ছিল। লাইট ছিল না, ওয়াশরুমে পানি জমে থাকত, সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। এছাড়াও নানান ছোটখাট সমস্যা। যেগুলো আমি এসেই ঠিক করে দিয়েছি। পানির সমস্যা নিয়ে আমি শুনেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে। এটা অনেক আগের সমস্যা। এছাড়া এখন তেমন কোন সমস্যা নেই। অধ্যক্ষ স্যার হোস্টেলের বিষয়ে খুবই আন্তরিক। সামান্য যেসব সমস্যা আছে আমরা তা স্যারের সাথে শেয়ার করেছি। এখানে অনেক আর্থিক বাজেটের ব্যাপার আছে। স্যার বিষয়টি নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
পানির সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেকবার এই পানির পাম্পটি পরিবর্তন করে দেখেছি। সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তবে আমরা শিগগিরই অন্য ভবনগুলোর পাম্প থেকে পানি এনে তা ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি। এটা হলে আমাদের সন্তানরা আশা করি আর সমস্যার সম্মুখীন হবে না।
একপাশে স্বর্গ
হল সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি ভবনের সবশেষটির কাজ শেষ হয়েছে ২০২২ সালে। এই ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর সেখানে যুক্ত হয় উন্নতমানের সব কিছু। ভবনে আছে সিলিং ফ্যান থেকে উন্নতমানের পানি ও টিভিরুমের ব্যবস্থা। ভবনের সামনে আছে ফুলের বাগান। এই ভবনের পরিচ্ছন্ন দেয়ালের রঙ দূর থেকেও অনায়াসে বোঝা যায়। এছাড়াও ভবনটির পাশের নিরাপত্তা দেয়ালও অন্যসবকটি থেকে উন্নত। তাছাড়া ভবনের সামনের বাদামতলার বসার সিটে রাতেও শিক্ষার্থীদের গল্প করার কথা শোনা যায়।
তাই হলের শিক্ষার্থীদের পছন্দের ভবন ৫ নম্বরটি। যেখানে এসে সবাই আড্ডা ও খোশ গল্পে মেতে ওঠেন।
নরক অন্যপাশে
জানা গেছে, পাঁচ নম্বর ভবন ছাড়া সবকটি ভবন নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকের। একনম্বর ভবনের নিচতলার কোন কক্ষে নেই শিক্ষার্থী। পোকামাকড়ের বাসা আর কাদামাটি ছাড়া এই ভবনের নিচতলায় কিছুই নেই। ভবনের কিছু জানালার কাঁচও ভাঙা। দুই নম্বর ভবনটি গতবছরের জুন মাসে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে খালি করা হয়েছে। যেকারণে ছাত্রীদের বাসযোগ্য আসনের সংখ্যা কমে এসেছে। তিন নম্বর ভবনের নিচতলায় চলছে সংস্কার কাজ। দেয়ালের কোন কোন অংশ ভাঙা। নেই পড়ার ভালো কোন কক্ষ। জানালার গ্রিলে মরিচা। যে কারণে নিচতলার দেয়াল ও ফ্লোর ছাত্রীদের থাকার উপযুক্ত নয়।
তাই গত ৫ বছর ধরে এই ভবনের নিচতলায় কোন শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা নেই। চার নম্বর ভবনের অবস্থাও একইরকম। কোথাও কোথাও ঝুলে আছে বৈদ্যুতিক তার। স্যাঁতসেঁতে ফ্লোরে বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। সামান্য বৃষ্টিতে পানি হয়ে যাওয়ায় আশপাশের জঙ্গল থেকে সাপ এসে প্রবেশ করে এই ভবনে। যে কারণে এই ভবনের নিচতলায় অস্থায়ীভাবে মাত্র দুই কক্ষে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বাকি কক্ষগুলো ফাঁকাই থাকে।