আবদুল্লাহ আল মারুফ
স্কুলের সামনের ফটকে বসে কয়েকজন নারী। একজন মধ্যবয়সী প্রতিবন্ধী পুরুষ বসে আছেন ফটকে। ভেতরে একটি কক্ষ খোলা। দুইটি টেবিলে বসে আছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বেলা তখন ১১টার বেশি। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেদকের ফোন পেয়ে বিদ্যালয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক। তার কিছুক্ষণ পর আসেন প্রধান শিক্ষক। দুজন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী দিয়েই চলে কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির বৃহস্পতিবারের অবস্থা এটি।
সরেজমিনে কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড় এলাকার এই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরোনো সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়’। জং ধরা কলাপসিবল গেটের ভেতরে আছে চারটি কক্ষ। যার ২টি ব্যবহার হয়। বাকি একটি রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে অফিস কক্ষ। সেটিও ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
স্বল্প আলোর প্রত্যেকটি ক্লাস রুমেই আছে বেঞ্চ। একটি কক্ষে আছে দুটি, আরেকটি কক্ষে তিনটি। আরেকটি কক্ষে আছে আটটি বেঞ্চ।
অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড়ের গুলবাগিচা স্কুলের পাশে বর্তমান নজরুল ইন্সটিটিউটের স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। একসময় সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার তার নামে প্রতিষ্ঠানটি করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বাহারের নামে প্রতিষ্ঠান করার বিষয়টি অনুমোদন করেনি। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর দুই বছর জামতলাসহ পার্কের বিভিন্ন স্থানে ক্লাস চলার পর ২০১২ সালের দিকে এটি গুলবাগিচা স্কুলের সামনে স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চলছে ক্লাস। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতায় তার উন্নয়ন কাজ করা হয়। সব শেষ জেলা পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটিতে টয়লেট নির্মাণ করা হয়।
শুরুর ইতিহাস
১৯৮৪ সালে স্থানীয় বাসিন্দা তার ময়নামতি টেক্সটাইল মিলের তৎকালীন ডিজিএম আশরাফ আলী চৌধুরী, ডা. সৈয়দ আহমেদ, একেএম তফাজ্জল আলী ও আনোয়ার কাদের বাকীসহ কয়েকজন প্রতিষ্ঠানটির শুরু করেন। এসময় ডিজিএম আশরাফ আলী চৌধুরীর ছেলে আরিফুর রহমান মিঠু, তৎকালীন সময়ে পুলিশ সুপার মর্জাদার পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে লুনা, স্থানীয় আইনুদ্দিন খোকন ও আইরিন সুলতানাসহ মোট ছয়জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। পরে তা দিনে দিনে ছড়িয়ে যায় জেলাজুড়ে। আসতে তাকে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুরা।
১৪৫ শিক্ষার্থীর দুইজন শিক্ষক
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের পড়ানো হয়। তার জন্য সরকার নির্ধারিত তালিকাভুক্তদের ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৪৫ শিক্ষার্থী আছে। যাদের ৪৫ জন সপ্তাহে ২-৩দিন আসেন। বাকিরা ৫ দিন পর্যন্ত আসেন। ১৪৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুইজন শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত আছেন।
প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ তাহমিনা আক্তার বলেন, এখানকার প্রত্যেকটি বাচ্চাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। নীতিমালা অনুযায়ী পাঁচজন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার নিয়ম। কিন্তু এখানে আছি আমরা মাত্র দুজন শিক্ষক। আর কোন সহকারী নেই। অথচ সহকারী সবচেয়ে বেশি দরকার। এখানে আরও ১০ জন শিক্ষক আর ছয়জন সহকারী দরকার। আমরা অনেকবার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু তাতে কোন সাড়া পাইনি।
তিন বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া
স্কুলটির সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর স্কুলটির বিদ্যুতের বিল বাকি রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও নথিগত সমস্যার পাশাপাশি স্কুলের আর্থিক ফান্ড না থাকায় বিদ্যুৎবিল দেয়া হচ্ছে না। তিন বছরে স্কুলটির বিদ্যুৎ বিল বাকি আছে প্রায় ১০ হাজার টাকা।
কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক জেএম মিজানুর রহমান খান বলেন, আমরা এটির সহযোগিতায় কাজ করছি। তবে এটি আলাদা ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত। আমাদের পক্ষে যা যা সহযোগিতা সম্ভব আমরা তা করছি। তবে মহাসড়কের সংকরপুর এলাকায় আমাদের আরেকটি কার্যালয় আছে সেখানেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সকল সহযোগিতা করার ব্যবস্থা রয়েছে।
স্কুলের সামনের ফটকে বসে কয়েকজন নারী। একজন মধ্যবয়সী প্রতিবন্ধী পুরুষ বসে আছেন ফটকে। ভেতরে একটি কক্ষ খোলা। দুইটি টেবিলে বসে আছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বেলা তখন ১১টার বেশি। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেদকের ফোন পেয়ে বিদ্যালয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক। তার কিছুক্ষণ পর আসেন প্রধান শিক্ষক। দুজন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী দিয়েই চলে কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির বৃহস্পতিবারের অবস্থা এটি।
সরেজমিনে কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড় এলাকার এই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরোনো সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়’। জং ধরা কলাপসিবল গেটের ভেতরে আছে চারটি কক্ষ। যার ২টি ব্যবহার হয়। বাকি একটি রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে অফিস কক্ষ। সেটিও ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
স্বল্প আলোর প্রত্যেকটি ক্লাস রুমেই আছে বেঞ্চ। একটি কক্ষে আছে দুটি, আরেকটি কক্ষে তিনটি। আরেকটি কক্ষে আছে আটটি বেঞ্চ।
অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড়ের গুলবাগিচা স্কুলের পাশে বর্তমান নজরুল ইন্সটিটিউটের স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়। একসময় সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার তার নামে প্রতিষ্ঠানটি করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বাহারের নামে প্রতিষ্ঠান করার বিষয়টি অনুমোদন করেনি। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর দুই বছর জামতলাসহ পার্কের বিভিন্ন স্থানে ক্লাস চলার পর ২০১২ সালের দিকে এটি গুলবাগিচা স্কুলের সামনে স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চলছে ক্লাস। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতায় তার উন্নয়ন কাজ করা হয়। সব শেষ জেলা পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটিতে টয়লেট নির্মাণ করা হয়।
শুরুর ইতিহাস
১৯৮৪ সালে স্থানীয় বাসিন্দা তার ময়নামতি টেক্সটাইল মিলের তৎকালীন ডিজিএম আশরাফ আলী চৌধুরী, ডা. সৈয়দ আহমেদ, একেএম তফাজ্জল আলী ও আনোয়ার কাদের বাকীসহ কয়েকজন প্রতিষ্ঠানটির শুরু করেন। এসময় ডিজিএম আশরাফ আলী চৌধুরীর ছেলে আরিফুর রহমান মিঠু, তৎকালীন সময়ে পুলিশ সুপার মর্জাদার পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে লুনা, স্থানীয় আইনুদ্দিন খোকন ও আইরিন সুলতানাসহ মোট ছয়জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। পরে তা দিনে দিনে ছড়িয়ে যায় জেলাজুড়ে। আসতে তাকে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুরা।
১৪৫ শিক্ষার্থীর দুইজন শিক্ষক
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যালয়টিতে প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের পড়ানো হয়। তার জন্য সরকার নির্ধারিত তালিকাভুক্তদের ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৪৫ শিক্ষার্থী আছে। যাদের ৪৫ জন সপ্তাহে ২-৩দিন আসেন। বাকিরা ৫ দিন পর্যন্ত আসেন। ১৪৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুইজন শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত আছেন।
প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ তাহমিনা আক্তার বলেন, এখানকার প্রত্যেকটি বাচ্চাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। নীতিমালা অনুযায়ী পাঁচজন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার নিয়ম। কিন্তু এখানে আছি আমরা মাত্র দুজন শিক্ষক। আর কোন সহকারী নেই। অথচ সহকারী সবচেয়ে বেশি দরকার। এখানে আরও ১০ জন শিক্ষক আর ছয়জন সহকারী দরকার। আমরা অনেকবার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। কিন্তু তাতে কোন সাড়া পাইনি।
তিন বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া
স্কুলটির সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর স্কুলটির বিদ্যুতের বিল বাকি রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও নথিগত সমস্যার পাশাপাশি স্কুলের আর্থিক ফান্ড না থাকায় বিদ্যুৎবিল দেয়া হচ্ছে না। তিন বছরে স্কুলটির বিদ্যুৎ বিল বাকি আছে প্রায় ১০ হাজার টাকা।
কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক জেএম মিজানুর রহমান খান বলেন, আমরা এটির সহযোগিতায় কাজ করছি। তবে এটি আলাদা ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত। আমাদের পক্ষে যা যা সহযোগিতা সম্ভব আমরা তা করছি। তবে মহাসড়কের সংকরপুর এলাকায় আমাদের আরেকটি কার্যালয় আছে সেখানেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সকল সহযোগিতা করার ব্যবস্থা রয়েছে।