• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> কুমিল্লা জেলা
> বরুড়া

চার মাস যাবৎ বেতন ভাতা বোনাস পাচ্ছেন না শিক্ষক ও কর্মচারীরা

জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা কাটেনি বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে

গাজীউল হক সোহাগ
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১২: ১৩
আপডেট : ২৪ মে ২০২৫, ১২: ২০
logo

জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা কাটেনি বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে

গাজীউল হক সোহাগ

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫, ১২: ১৩
Photo

জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে প্রায় পাঁচ মাসেও কুমিল্লার বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অচলাবস্থার নিরসন হয়নি। উল্টো শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি বেড়েছে। কথা বলা ও সালাম বিনিময়ও এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। সমস্যা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। নয় শিক্ষকের মধ্যে সাতজন এক পক্ষে, দুইজন আরেক পক্ষে। এ অবস্থায় শিক্ষক ও কর্মচারীরা চার মাস যাবৎ বেতন ভাতা বোনাস পাচ্ছেন না। চলতি মাসের বেতন ভাতা পাবেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের ভাষ্য, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব কে পালন করবেন এই নিয়ে ঠেলাঠেলির কারণে তাঁরা মাসের বেতন পাচ্ছেন না। রমজান, ঈদুল ফিতর বোনাস, পহেলা বৈশাখ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দরভাবে করতে পারেননি। সামনে কোরবানির ঈদ। ওই ঈদে কোরবানি দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে। তাঁরা এই অচলাবস্থার নিরসন চান। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চান।

এদিকে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও কুমিল্লা আঞ্চলিক দপ্তরে অভিযোগ করেছেন এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। মাউশি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমকে বিধিলঙ্ঘন করায় সতর্ক করেছে।

এদিকে যথাসময়ে বেতন ভাতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকেরা। তাঁরা বলেছেন, ঈদ সামনে। এখনও তাঁরা বোনাস পাননি। চার মাস বেতন ভাতাও পাচ্ছেন না। এই মাসে সুরাহা না হলে পাঁচ মাস গড়াবে সমস্যা। এতে করে পরিবার নিয়ে বেকায়দায় আছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পিআরএলে যান আঞ্জুমান আরা বেগম। যাওয়ার সময় তিনি সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে পঞ্চম এমন একজনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে যান। এরপর এ নিয়ে ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ বি এম কায়েদে আবেদীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে গত ১ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে তিনি বিধি মোতাবেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ওই আবেদন মাউশিতে প্রেরণ করেন। পরে এ নিয়ে তদন্ত হয়। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বিধি বহির্ভূতভাবে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম তাঁর পছন্দের ব্যক্তি কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল হোসেনকে দায়িত্ব দেন । কিন্তু কামাল হোসেনের বাইরে আরও চারজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আছেন। তাঁরা হলেন এ বিএম কায়েদে আবেদীন, মো. রফিকুল হক. মো. আবদুল আলী ও স্বপন কুমার সরকার।

২০২১ সালের ৩০ জুন বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম পদোন্নতিপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের একটি তালিকা করেন। এতে মো. কামাল হোসেনের নাম পাঁচ নম্বরে আছে। পদোন্নতিতে কামাল হোসেনের ক্রমিক নম্বর ৩৬৩০। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ বিএম কায়েদে আবেদীনের ক্রমিক নং ১৯৯৮।

এ নিয়ে সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে গত ১৬ মার্চ মাউশির সহকারী পরিচালক ( মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল হোসেন কে চিঠি দেন। এতে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য বলা হয়। কিন্তু কামাল হোসেন তিন কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। উল্টো ১৯ মার্চ তিনি মাউশির মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন ১৯৯৫ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। ৩০ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আমাদের জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি গণ্য করেনি। তারা ১৯৯৫ সালের ২ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আমাদের জ্যেষ্ঠতা গণ্য করে ২০০৪ সালের ২২ মে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর মামলার বিষয়টি তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমকে অবহিত করা হয়। এরপর আঞ্জুমান আমাকে দায়িত্ব দেন। এরপর চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা প্রদানের জন্য উপপরিচালক মাউশি কুমিল্লার উপপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোন ধরনের ফায়সালা করেননি। ওই কারণে বেতন ভাতা বোনাস পাচ্ছেন না শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এছাড়া আপিল বিভাগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে। মাউশি আমাকে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব থেকে সরানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে তা আদালত অবমাননা। এ অবস্থায় আমাকে ৫ মার্চের আদেশ বাতিল করে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হোক।

এছাড়া মো. কামাল হোসেন নিজেকে সিনিয়র শিক্ষক দাবি করে নয়জন শিক্ষকদের একটি তালিকা তৈরি করেন। এতে তাঁর নাম ১ নম্বরে রাখেন। কামাল ও স্বপন কুমার সরকার দুইজনই কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক। তাঁরা একপক্ষে। অপর সাত শিক্ষক আরেকপক্ষে।

জানতে চাইলে মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি ১৯৯৫ সালে চাকরিতে যোগদান করি। আমিই সিনিয়র। যাঁরা আমার আগে আছে, তাঁরা জুনিয়র। এটা নিয়ে মামলা আছে। মাউশির চিঠি পেয়েছি। জবাব দিয়েছি। আদালতে এ নিয়ে রিট করা আছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, মাউশি সিদ্ধান্ত দিয়েছে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কে দায়িত্ব দিতে। আমরা সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু কামাল হোসেন দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। আদালতের বিষয় তোলে।

কবে সুরাহা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাউশি এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা করবে। কামালের কারণে আমাদের শিক্ষকেরা বেতন ভাতা ও বোনাস পাচ্ছেন না। কর্মচারীসহ সবার বেতন আটকে আছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মাধ্যমিকের পরিচালক মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

কামাল হোসেন কি এই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক? এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল ইসলাম বলেন,‘ কৃষিবিজ্ঞানের কামাল হোসেন সিনিয়র শিক্ষক নন। কামালের চেয়ে স্বপন কুমার সরকার সিনিয়র শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সরকারকে দিলেন না কেন দায়িত্ব, যদি সিনিয়র শিক্ষক মানতেন। বিদায়ী প্রধান শিক্ষক কোন নিয়ম না মেনেই কামালকে দায়িত্ব দেন। এটা উনি ঠিক করেননি। এজন্য তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে যেভাবে সিনিয়র শিক্ষকের তালিকা করা হয়, এটা আর কোথাও নেই। এখানে কামালও সিনিয়র না, স্বপনও না। সিনিয়র এ বিএম কায়েদে আবেদীন। আমাদের তদন্তে তা-ই উঠে এসেছে। আদালতের রিট, মামলা এগুলো চলমান প্রক্রিয়া।

উল্লেখ,বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকেরা এ নিয়ে আমার শহরে গত ২০ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

Thumbnail image

জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে প্রায় পাঁচ মাসেও কুমিল্লার বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অচলাবস্থার নিরসন হয়নি। উল্টো শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি বেড়েছে। কথা বলা ও সালাম বিনিময়ও এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। সমস্যা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। নয় শিক্ষকের মধ্যে সাতজন এক পক্ষে, দুইজন আরেক পক্ষে। এ অবস্থায় শিক্ষক ও কর্মচারীরা চার মাস যাবৎ বেতন ভাতা বোনাস পাচ্ছেন না। চলতি মাসের বেতন ভাতা পাবেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের ভাষ্য, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব কে পালন করবেন এই নিয়ে ঠেলাঠেলির কারণে তাঁরা মাসের বেতন পাচ্ছেন না। রমজান, ঈদুল ফিতর বোনাস, পহেলা বৈশাখ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দরভাবে করতে পারেননি। সামনে কোরবানির ঈদ। ওই ঈদে কোরবানি দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়বে। তাঁরা এই অচলাবস্থার নিরসন চান। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চান।

এদিকে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও কুমিল্লা আঞ্চলিক দপ্তরে অভিযোগ করেছেন এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। মাউশি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমকে বিধিলঙ্ঘন করায় সতর্ক করেছে।

এদিকে যথাসময়ে বেতন ভাতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকেরা। তাঁরা বলেছেন, ঈদ সামনে। এখনও তাঁরা বোনাস পাননি। চার মাস বেতন ভাতাও পাচ্ছেন না। এই মাসে সুরাহা না হলে পাঁচ মাস গড়াবে সমস্যা। এতে করে পরিবার নিয়ে বেকায়দায় আছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পিআরএলে যান আঞ্জুমান আরা বেগম। যাওয়ার সময় তিনি সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে পঞ্চম এমন একজনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে যান। এরপর এ নিয়ে ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ বি এম কায়েদে আবেদীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে গত ১ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে তিনি বিধি মোতাবেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ওই আবেদন মাউশিতে প্রেরণ করেন। পরে এ নিয়ে তদন্ত হয়। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বিধি বহির্ভূতভাবে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম তাঁর পছন্দের ব্যক্তি কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল হোসেনকে দায়িত্ব দেন । কিন্তু কামাল হোসেনের বাইরে আরও চারজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আছেন। তাঁরা হলেন এ বিএম কায়েদে আবেদীন, মো. রফিকুল হক. মো. আবদুল আলী ও স্বপন কুমার সরকার।

২০২১ সালের ৩০ জুন বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম পদোন্নতিপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের একটি তালিকা করেন। এতে মো. কামাল হোসেনের নাম পাঁচ নম্বরে আছে। পদোন্নতিতে কামাল হোসেনের ক্রমিক নম্বর ৩৬৩০। অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এ বিএম কায়েদে আবেদীনের ক্রমিক নং ১৯৯৮।

এ নিয়ে সদ্য বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এদিকে গত ১৬ মার্চ মাউশির সহকারী পরিচালক ( মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামাল হোসেন কে চিঠি দেন। এতে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য বলা হয়। কিন্তু কামাল হোসেন তিন কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। উল্টো ১৯ মার্চ তিনি মাউশির মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন ১৯৯৫ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। ৩০ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আমাদের জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি গণ্য করেনি। তারা ১৯৯৫ সালের ২ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আমাদের জ্যেষ্ঠতা গণ্য করে ২০০৪ সালের ২২ মে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর মামলার বিষয়টি তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগমকে অবহিত করা হয়। এরপর আঞ্জুমান আমাকে দায়িত্ব দেন। এরপর চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা প্রদানের জন্য উপপরিচালক মাউশি কুমিল্লার উপপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোন ধরনের ফায়সালা করেননি। ওই কারণে বেতন ভাতা বোনাস পাচ্ছেন না শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এছাড়া আপিল বিভাগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে। মাউশি আমাকে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব থেকে সরানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে তা আদালত অবমাননা। এ অবস্থায় আমাকে ৫ মার্চের আদেশ বাতিল করে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হোক।

এছাড়া মো. কামাল হোসেন নিজেকে সিনিয়র শিক্ষক দাবি করে নয়জন শিক্ষকদের একটি তালিকা তৈরি করেন। এতে তাঁর নাম ১ নম্বরে রাখেন। কামাল ও স্বপন কুমার সরকার দুইজনই কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক। তাঁরা একপক্ষে। অপর সাত শিক্ষক আরেকপক্ষে।

জানতে চাইলে মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি ১৯৯৫ সালে চাকরিতে যোগদান করি। আমিই সিনিয়র। যাঁরা আমার আগে আছে, তাঁরা জুনিয়র। এটা নিয়ে মামলা আছে। মাউশির চিঠি পেয়েছি। জবাব দিয়েছি। আদালতে এ নিয়ে রিট করা আছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, মাউশি সিদ্ধান্ত দিয়েছে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কে দায়িত্ব দিতে। আমরা সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু কামাল হোসেন দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। আদালতের বিষয় তোলে।

কবে সুরাহা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাউশি এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা করবে। কামালের কারণে আমাদের শিক্ষকেরা বেতন ভাতা ও বোনাস পাচ্ছেন না। কর্মচারীসহ সবার বেতন আটকে আছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মাধ্যমিকের পরিচালক মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

কামাল হোসেন কি এই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক? এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল ইসলাম বলেন,‘ কৃষিবিজ্ঞানের কামাল হোসেন সিনিয়র শিক্ষক নন। কামালের চেয়ে স্বপন কুমার সরকার সিনিয়র শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সরকারকে দিলেন না কেন দায়িত্ব, যদি সিনিয়র শিক্ষক মানতেন। বিদায়ী প্রধান শিক্ষক কোন নিয়ম না মেনেই কামালকে দায়িত্ব দেন। এটা উনি ঠিক করেননি। এজন্য তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে যেভাবে সিনিয়র শিক্ষকের তালিকা করা হয়, এটা আর কোথাও নেই। এখানে কামালও সিনিয়র না, স্বপনও না। সিনিয়র এ বিএম কায়েদে আবেদীন। আমাদের তদন্তে তা-ই উঠে এসেছে। আদালতের রিট, মামলা এগুলো চলমান প্রক্রিয়া।

উল্লেখ,বরুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকেরা এ নিয়ে আমার শহরে গত ২০ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে চাপ, ধীরগতিতে চলছে পরিবহন

২

দেবীদ্বারে আ.লীগ নেতা ফখরুল গ্রেপ্তার

৩

সড়ক বন্ধ করে পশুর হাটে দুর্ভোগ

৪

নগরের বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো থাকে ময়লা

৫

জলাশয় ভরাট করে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের বহুতল ভবন নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে চাপ, ধীরগতিতে চলছে পরিবহন

ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে চাপ, ধীরগতিতে চলছে পরিবহন

১ ঘণ্টা আগে
দেবীদ্বারে আ.লীগ নেতা ফখরুল গ্রেপ্তার

দেবীদ্বারে আ.লীগ নেতা ফখরুল গ্রেপ্তার

১২ ঘণ্টা আগে
সড়ক বন্ধ করে পশুর হাটে দুর্ভোগ

সড়ক বন্ধ করে পশুর হাটে দুর্ভোগ

১২ ঘণ্টা আগে
নগরের বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো থাকে ময়লা

নগরের বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো থাকে ময়লা

১২ ঘণ্টা আগে