এবিএম আতিকুর রহমান বাশার
কুমিল্লার দেবীদ্বারে ফসলি জমির মাঠে শত বছরের পুরোনো এক বটবৃক্ষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এই বটবৃক্ষটিকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে চলে আসা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পুটিয়াপাড়া কাইস্যা মেলা’র ইতি ঘটেছে অনেক আগেই।
স্থানীয়রা জানান, ২৫০ থেকে ৩০০ বছর, কারো কারো মতে ৪০০ বছরের পুরনো এ বটবৃক্ষটিকে ঘিরে ঐতিহ্যবাহী ‘পুটিয়াপাড়া কাইস্যা মেলা’টি প্রতি বছর স্বরসতী পূজাকে কেন্দ্র করে এই বটতলায় অনুষ্ঠিত হতো।
উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের পুটিয়াপাড়া গ্রামটি ছিল হিন্দু অধ্যুষিত। বর্তমান সময়ে অনেক মুসলিম এসে এ গ্রামে বসবাস শুরু করেছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অনেকেই চলে গেছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন স্থানে।
ওই গ্রামে কাসার তৈরি তৈজস সামগ্রী বিক্রেতা ছিলেন একাধিক পরিবার। মেলায় কাসার তৈরি সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত ছিল। কাসার মেলা থেকে কালক্রমে মেলাটির নাম কাইস্যা মেলায় নামকরণে প্রতিষ্ঠা পায়।
স্থানীয় আতিকুর রহমান জানান, আমাদের বাবা দাদাদের কাছ থেকে এই বটগাছের কথা শুনেছি। ছোটবেলায় এই বটগাছের নিচে মেলা জমত। ভোর থেকেই আনাগোনা শুরু হতো দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবার, খেলনা, কাসা, পিতল, তামা, অ্যালমুনিয়াম, মাটির তৈরি তৈজস সামগ্রী, কাঠ, বেত, পাটের তৈরি কুটির শিল্প সামগ্রী, মাছ, মাংস, তরিতরকারিসহ নানা পর্ষদের সমাহারে ভরে উঠতো। এছাড়াও মেলায় আগত মানুষের মূল আকর্ষণ ছিল ঘোড়া দৌড়, গরুর গাড়ি দৌড় প্রতিযোগিতাসহ নানা খেলা দেখা। দূরদূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতারা আসতেন এ মেলায়। এ মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পাঠা বলি দিয়ে মেলার উদ্বোধন। স্বরসতী পূজা এবং এই মেলাকে ঘিরে অত্র এলাকার আত্মীয়স্বজনরা চলে আসতেন ২-১ দিন আগে থেকেই। তখন এ এলাকায় মানুষের মধ্যে এক আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করতো।
মোবারক হোসেন নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ জানান, বটবৃক্ষের আশেপাশে মেলাতে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত অনাবাদি জমিগুলো ১৯৮২ সালে ডিপটিউবওয়েলর পানি সরবরাহের মাধ্যমে বোরো ধান চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হয়। ধীরে ধীরে মেলার জায়গা বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে কালের পরিক্রমায় ওই ঐতিহ্যবাহী মেলাটিও হারিয়ে যায়। এখন আর মেলা হয় না। হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে এখন অধিকাংশ মুসলিমদের আবাসন। মেলা স্থানের পাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে কালের সাক্ষী সেই বটগাছটি।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে বটগাছটিকে দেখা যায় বিভিন্ন লতাপাতায় জড়িয়ে আছে গাছটিকে।
স্থানীয়রা জানান, কোনো প্রকার কুসংস্কারের বলি হয়ে এই বটবৃক্ষটি যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বানও জানান তাঁরা। কারণ গ্রাম বাংলার শত শত বছরের ঐতিহ্যধারণকারী বটবৃক্ষগুলো নানা কারণে আজ বিলুপ্ত প্রায়।
সুবিল ইউপি চেয়ারম্যান সারওয়ার হোসেন মুকুল ভূঁইয়া জানান, আমি ছোটবেলায় এ মেলায় গিয়েছি। মেলাটি কাইস্যা মেলা নামে পরিচিত। মেলার অংশটি ছিল খাস জমির ওপর। খাস জমিগুলো এখন বিভিন্ন জনের দখলে আবাদি জমি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় প্রায় ৪০ বছর ধরে মেলা হয় না। তবে ঐতিহাসিক এ বটবৃক্ষটিকে কৃষ্টি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় সংরক্ষণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লার দেবীদ্বারে ফসলি জমির মাঠে শত বছরের পুরোনো এক বটবৃক্ষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এই বটবৃক্ষটিকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে চলে আসা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পুটিয়াপাড়া কাইস্যা মেলা’র ইতি ঘটেছে অনেক আগেই।
স্থানীয়রা জানান, ২৫০ থেকে ৩০০ বছর, কারো কারো মতে ৪০০ বছরের পুরনো এ বটবৃক্ষটিকে ঘিরে ঐতিহ্যবাহী ‘পুটিয়াপাড়া কাইস্যা মেলা’টি প্রতি বছর স্বরসতী পূজাকে কেন্দ্র করে এই বটতলায় অনুষ্ঠিত হতো।
উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের পুটিয়াপাড়া গ্রামটি ছিল হিন্দু অধ্যুষিত। বর্তমান সময়ে অনেক মুসলিম এসে এ গ্রামে বসবাস শুরু করেছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অনেকেই চলে গেছেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন স্থানে।
ওই গ্রামে কাসার তৈরি তৈজস সামগ্রী বিক্রেতা ছিলেন একাধিক পরিবার। মেলায় কাসার তৈরি সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত ছিল। কাসার মেলা থেকে কালক্রমে মেলাটির নাম কাইস্যা মেলায় নামকরণে প্রতিষ্ঠা পায়।
স্থানীয় আতিকুর রহমান জানান, আমাদের বাবা দাদাদের কাছ থেকে এই বটগাছের কথা শুনেছি। ছোটবেলায় এই বটগাছের নিচে মেলা জমত। ভোর থেকেই আনাগোনা শুরু হতো দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবার, খেলনা, কাসা, পিতল, তামা, অ্যালমুনিয়াম, মাটির তৈরি তৈজস সামগ্রী, কাঠ, বেত, পাটের তৈরি কুটির শিল্প সামগ্রী, মাছ, মাংস, তরিতরকারিসহ নানা পর্ষদের সমাহারে ভরে উঠতো। এছাড়াও মেলায় আগত মানুষের মূল আকর্ষণ ছিল ঘোড়া দৌড়, গরুর গাড়ি দৌড় প্রতিযোগিতাসহ নানা খেলা দেখা। দূরদূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতারা আসতেন এ মেলায়। এ মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পাঠা বলি দিয়ে মেলার উদ্বোধন। স্বরসতী পূজা এবং এই মেলাকে ঘিরে অত্র এলাকার আত্মীয়স্বজনরা চলে আসতেন ২-১ দিন আগে থেকেই। তখন এ এলাকায় মানুষের মধ্যে এক আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করতো।
মোবারক হোসেন নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ জানান, বটবৃক্ষের আশেপাশে মেলাতে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত অনাবাদি জমিগুলো ১৯৮২ সালে ডিপটিউবওয়েলর পানি সরবরাহের মাধ্যমে বোরো ধান চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হয়। ধীরে ধীরে মেলার জায়গা বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে কালের পরিক্রমায় ওই ঐতিহ্যবাহী মেলাটিও হারিয়ে যায়। এখন আর মেলা হয় না। হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে এখন অধিকাংশ মুসলিমদের আবাসন। মেলা স্থানের পাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে কালের সাক্ষী সেই বটগাছটি।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে বটগাছটিকে দেখা যায় বিভিন্ন লতাপাতায় জড়িয়ে আছে গাছটিকে।
স্থানীয়রা জানান, কোনো প্রকার কুসংস্কারের বলি হয়ে এই বটবৃক্ষটি যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বানও জানান তাঁরা। কারণ গ্রাম বাংলার শত শত বছরের ঐতিহ্যধারণকারী বটবৃক্ষগুলো নানা কারণে আজ বিলুপ্ত প্রায়।
সুবিল ইউপি চেয়ারম্যান সারওয়ার হোসেন মুকুল ভূঁইয়া জানান, আমি ছোটবেলায় এ মেলায় গিয়েছি। মেলাটি কাইস্যা মেলা নামে পরিচিত। মেলার অংশটি ছিল খাস জমির ওপর। খাস জমিগুলো এখন বিভিন্ন জনের দখলে আবাদি জমি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় প্রায় ৪০ বছর ধরে মেলা হয় না। তবে ঐতিহাসিক এ বটবৃক্ষটিকে কৃষ্টি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় সংরক্ষণের জোর দাবি জানাচ্ছি।