নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার নয় বছরেও কোন আসামি শনাক্ত হয়নি। মামলার কোন অগ্রগতি নেই। কোন ধরনের চার্জশিটও (অভিযোগপত্র) দেওয়া হয়নি। বাদীপক্ষের সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার কোন যোগাযোগও নেই । এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের নয় বছর পূর্ণ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর সেনানিবাসের ঝোপজঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে তনুর বাবা ও মামলার বাদী কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ( ৩১ ডিসেম্বর থেকে এলপিআরে আছেন) ইয়ার হোসেন দাবি করেছেন, ‘এতদিন আওয়ামী লীগ সরকার ছিল। তাই বিচার হয়নি। সরকারই চায়নি এডার ( এই মামলার) বিচার হোক। এখন আমরা ড. ইউনূস সরকারের কাছে বিচার চাই।’
ইয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘নয় বছর বিচারের অপেক্ষায় আছি। আল্লাহ যদি বিচার করে। নতুন সরকার দেহি কিতা করে।’
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,‘ নয় বছর যাঁরা মামলার আয়ু (তদন্ত কর্মকর্তা) ছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হোক। ওরা মামলাটারে নষ্ট করে দিয়েছে। ওদেরও বিচার করতে হবে। ’ আনোয়ারা বেগমের প্রশ্ন- এত বছর কেন লাগছে তদন্তে?
একমাত্র মেয়ের স্মৃতিচারণা করে আনোয়ারা বেগম বলেন,‘ মেয়েডা যখন বাইচা (বেঁচে) ছিল , তখন আলোতে ছিলাম। আলোতে দিন কাটাইছি। আলোতে আছলাম ( ছিলাম)। গত নয় বছর ধরে অন্ধকারে আছি। ’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরের কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন । এরপর প্রথমে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলামকে। পরে দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ মামলার তদন্ত দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মনজুর আলমকে। পরবর্তীতে তৃতীয়বার ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সিআইডির কুমিল্লার পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম তদন্ত করেন। চতুর্থবার ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জালাল উদ্দিন আহম্মদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জালাল উদ্দিন আহম্মদ চার বছরের অধিকসময় এই মামলার কিনারা করতে পারেননি। পঞ্চমবার ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) ঢাকার সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। তখন তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক মজিবুর রহমান। এরপর পিবিআই তিনবার কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তাঁদের ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পিবিআই ২০২০ সালের নভেম্বরের পর বাদীপক্ষের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি বলে দাবি পরিবারটির। এদিকে গত বছরের (২০২৪) সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ষষ্ঠবারের মতো বদল হয়। এবার তদন্ত কর্মকর্তা দেওয়া হয় পিবিআইয়ের ঢাকার আরেক পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমার শহরকে বলেন, ‘আমি ঈদের আগে কুমিল্লায় যাব। এই মামলার তদন্ত হুট করে করা যায় না। কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। আমরা কাজ করছি।’
কিন্তু তনুর মায়ের অভিযোগ, আপনারা বাদী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করছেন না। কোন কথা বলছেন না। এ প্রসঙ্গে তরিকুল ইসলাম বলেন,‘ আমরা তদন্ত করছি। সময় হলে দেখা করব। যোগাযোগ করব।’
তনু হত্যার বিচারের দাবিতে সক্রিয় ছিলেন কুমিল্লার সংস্কৃতিকর্মী খায়রুল আনাম রায়হান। তিনি বলেন, ' এই হত্যাকাণ্ড সারাদেশের মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটেছিল। চাইলেই মামলাটি কেউ ধাপাচাপা দিয়ে কিছু সময় রাখতে পারে, পারবে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ক্লু একদিন উদঘাটিত হবে। ধর্ষণের পর একটি মেয়েকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ নিরাপত্তা এলাকায় পাওয়া যায়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাঁরা ধামাচাপা দিচ্ছেন কিংবা চেষ্টা করছেন-তাঁদের উচিত নিজেদের বিবেক কে প্রশ্ন করা।’
তনুর নবম মৃত্যুবার্ষিকী: এ উপলক্ষে আগামী শুক্রবার ২১ মার্চ বাদ জুমা গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে মিলাদ মাহফিল হবে। গ্রামের দুইটি মসজিদ ও মাদ্রাসায় তনুর জন্য দোয়া করা হবে। তবে ২০ মার্চ দিনটি উপলক্ষে কুমিল্লায় কোন কর্মসূচি নেই।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার নয় বছরেও কোন আসামি শনাক্ত হয়নি। মামলার কোন অগ্রগতি নেই। কোন ধরনের চার্জশিটও (অভিযোগপত্র) দেওয়া হয়নি। বাদীপক্ষের সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার কোন যোগাযোগও নেই । এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের নয় বছর পূর্ণ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এরপর সেনানিবাসের ঝোপজঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে তনুর বাবা ও মামলার বাদী কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ( ৩১ ডিসেম্বর থেকে এলপিআরে আছেন) ইয়ার হোসেন দাবি করেছেন, ‘এতদিন আওয়ামী লীগ সরকার ছিল। তাই বিচার হয়নি। সরকারই চায়নি এডার ( এই মামলার) বিচার হোক। এখন আমরা ড. ইউনূস সরকারের কাছে বিচার চাই।’
ইয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘নয় বছর বিচারের অপেক্ষায় আছি। আল্লাহ যদি বিচার করে। নতুন সরকার দেহি কিতা করে।’
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,‘ নয় বছর যাঁরা মামলার আয়ু (তদন্ত কর্মকর্তা) ছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হোক। ওরা মামলাটারে নষ্ট করে দিয়েছে। ওদেরও বিচার করতে হবে। ’ আনোয়ারা বেগমের প্রশ্ন- এত বছর কেন লাগছে তদন্তে?
একমাত্র মেয়ের স্মৃতিচারণা করে আনোয়ারা বেগম বলেন,‘ মেয়েডা যখন বাইচা (বেঁচে) ছিল , তখন আলোতে ছিলাম। আলোতে দিন কাটাইছি। আলোতে আছলাম ( ছিলাম)। গত নয় বছর ধরে অন্ধকারে আছি। ’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরের কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন । এরপর প্রথমে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলামকে। পরে দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ মামলার তদন্ত দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মনজুর আলমকে। পরবর্তীতে তৃতীয়বার ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সিআইডির কুমিল্লার পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম তদন্ত করেন। চতুর্থবার ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জালাল উদ্দিন আহম্মদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জালাল উদ্দিন আহম্মদ চার বছরের অধিকসময় এই মামলার কিনারা করতে পারেননি। পঞ্চমবার ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) ঢাকার সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। তখন তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক মজিবুর রহমান। এরপর পিবিআই তিনবার কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তাঁদের ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পিবিআই ২০২০ সালের নভেম্বরের পর বাদীপক্ষের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি বলে দাবি পরিবারটির। এদিকে গত বছরের (২০২৪) সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ষষ্ঠবারের মতো বদল হয়। এবার তদন্ত কর্মকর্তা দেওয়া হয় পিবিআইয়ের ঢাকার আরেক পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমার শহরকে বলেন, ‘আমি ঈদের আগে কুমিল্লায় যাব। এই মামলার তদন্ত হুট করে করা যায় না। কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। আমরা কাজ করছি।’
কিন্তু তনুর মায়ের অভিযোগ, আপনারা বাদী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করছেন না। কোন কথা বলছেন না। এ প্রসঙ্গে তরিকুল ইসলাম বলেন,‘ আমরা তদন্ত করছি। সময় হলে দেখা করব। যোগাযোগ করব।’
তনু হত্যার বিচারের দাবিতে সক্রিয় ছিলেন কুমিল্লার সংস্কৃতিকর্মী খায়রুল আনাম রায়হান। তিনি বলেন, ' এই হত্যাকাণ্ড সারাদেশের মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটেছিল। চাইলেই মামলাটি কেউ ধাপাচাপা দিয়ে কিছু সময় রাখতে পারে, পারবে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ক্লু একদিন উদঘাটিত হবে। ধর্ষণের পর একটি মেয়েকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ নিরাপত্তা এলাকায় পাওয়া যায়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাঁরা ধামাচাপা দিচ্ছেন কিংবা চেষ্টা করছেন-তাঁদের উচিত নিজেদের বিবেক কে প্রশ্ন করা।’
তনুর নবম মৃত্যুবার্ষিকী: এ উপলক্ষে আগামী শুক্রবার ২১ মার্চ বাদ জুমা গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে মিলাদ মাহফিল হবে। গ্রামের দুইটি মসজিদ ও মাদ্রাসায় তনুর জন্য দোয়া করা হবে। তবে ২০ মার্চ দিনটি উপলক্ষে কুমিল্লায় কোন কর্মসূচি নেই।