• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> শিক্ষা

কুমিল্লার সেরা দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মস্থলে যেতে পারছেন না

গাজীউল হক সোহাগ
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১৩: ২৫
logo

কুমিল্লার সেরা দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মস্থলে যেতে পারছেন না

গাজীউল হক সোহাগ

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১৩: ২৫
Photo

জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তার ও কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না। তাঁরা বেতন ভাতাও পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠান দুইটি কুমিল্লা শহরের সেরা । কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডেরও সেরা প্রতিষ্ঠান ।

কুমিল্লার নাগরিক সমাজ ও অভিভাবকদের অভিমত, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের নিয়ে বসলেই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণ ফিরে আসবে। শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তার। শুরুতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে। এরপর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদান চলে। প্রতিষ্ঠার পর খুব কম সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি নাম করে। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে, জাতীয় পর্যায়ে ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭১০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষক আছেন ৫৬ জন। এর মধ্যে নিবন্ধনধারী আছেন ৪১ জন। ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতনও বেশি। কলেজ তহবিলে প্রায় ১১ কোটি টাকার মতো আছে। জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। তখন জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে কলেজের চারজন শিক্ষক বিভিন্ন মহল ও শিক্ষার্থীদের কিছু অংশকে যুক্ত করে নার্গিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। গত বছরের ১৮ আগস্ট তিনি সর্বশেষ কলেজে যান। ১৯ আগস্ট তাঁকে নিয়ে জেলা প্রশাসে কর দপ্তরে সভা হয়। ওইদিন বৃষ্টিভেজা রাতে তাঁকে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে বের হওয়ার পর টেনেহিচড়ে কলেজে নেওয়া হয়। এরপর জোরপূর্বক তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেওয়া হয়। নার্গিস এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত তাঁকে যোগদা-ে নর জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে যোগদানে বাধা দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না। আদালতের রায়ও কার্যকর হচ্ছে না।

অভিযোগ উঠেছে, কলেজের চারজন শিক্ষক ও জেলা প্রশাসনের একটি অংশ নার্গিসকে কলেজে যেতে দিচ্ছেন না। এদিকে অধ্যক্ষ কর্মস্থলে যেতে না পারায় জেলা প্রশাসন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও বর্তমানে রাজস্ব ফাহমিদা মুস্তফাকে কলেজের পরিচালক হিসেবে মনোনীত করেন। তিনিই এখন কলেজ চালাচ্ছেন, সঙ্গে একজন সহকারী কমিশনারও আছেন। অন্যদিকে নার্গিস আক্তার আদালতের নির্দেশনার পরেও কয়েকজন শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না।

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার বলেন, 'কুমিল্লা শহরবাসী জানেন, কিভাবে এ পর্যন্ত এই কলেজকে টেনে এনেছি। আমি আদালতের নির্দেশনার পরেও কর্মস্থলে যেতে পারছি না। চারজন শিক্ষক আমাকে যেতে বাধা দিচ্ছেন। তারা মব তৈরি করছেন। জেলা প্রশাসক স্যার চাইলেই আমি কাজে যেতে পারি। প্রতিষ্ঠান তাঁদের। নিরাপত্তা দেওয়াও তাঁদের। '

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) ও বর্তমানে রাজস্ব ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, অধ্যক্ষ না থাকাতে আমি এখন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করছি।' এ প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার সম্প্রতি কুমিল্লা কার্যক্রম শহরের উন্নয়ন আয়োজিত এক মতবিনিময়সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের নিয়ে জবাবে বলেন,' আদালত উনাকে (অধ্যক্ষ নার্গিস) কলেজে যেতে বলেছেন, উনি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে যাচ্ছেন না। আমরা তো বাধা দিচ্ছি না।' এদিকে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রভাতী শাখার মো. আবুল কাশেম ও দিবা শাখার রাসেল উদ্দিন মজুমদারও যেতে পারছেন না। কাশেম ৫ আগস্ট থেকে ও রাসেল ৬ আগস্ট থেকে যাচ্ছেন না। প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন ১২ আগস্ট থেকে যাচ্ছেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আন্দোলন হয় কুমিল্লা পুবালী চত্বরে, স্কুলে ও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে। পরে জেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক সৈয়দা রোকেয়া বেগমকে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন। এক পর্যায়ে তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর আরেক সহকারী শিক্ষক নুসরাত জাহান কে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ যোগদান করি। আমি কোন অন্যায় করিনি। কোন কারণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এখন সারাদেশে গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তারা যোগদান করেছেন। আমি সুন্দরভাবে স্কুল

চালাচ্ছিলাম। এ বিদ্যালয়ে ১৫২ জন শিক্ষক আছেন। শিক্ষার্থী সাত হাজারের মতো। তহবিলে টাকাও আছে ১৪ কোটি। এসএসসির ফলাফলে কুমিল্লা বোর্ডে জিপিএ৫ এ সবার শীর্ষে। পাসের হারও সন্তোষজনক। গত বছরের আগস্ট থেকে বেতন পাই না। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। বিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রধান শিক্ষকও নেই। এভাবে আর কতোদিন বসে থাকব।

জেলা প্রশাসন চাইলেই আমি বিদ্যালয়ে যেতে পারি।'

প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা নুসরাত জাহান বলেন, আমার ওপর বড় দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করছি টেনশন নিয়ে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, সেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক দুইজন ছাত্র জনতার বিপ্লবের সময় থেকেই উধাও। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছি। বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে।

কুমিল্লার অন্তত পাঁচজন নাগরিক সমাজের ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, জেলা প্রশাসক সবাইকে নিয়ে বসলে বিরাজমান সমস্যার সমাধান এক নিমিষেই হয়ে যাবে। তিনি কুমিল্লা ক্লাব, কুমিল্লা টাউন হল, টাউন হল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের জটিল বিষয় সমাধান করেছেন। দুইটি সেরা প্রতিষ্ঠানের সমস্যাও দূর করতে পারবেন। ভালো দুইটি প্রতিষ্ঠান যেন রাজনৈতিক কারণে বা কোন সিন্ডিকেটের কারণে ধ্বংস না হয়। পড়াশোনা ব্যাহত না হয়। মডার্ন হাইস্কুল ও কালেক্টরেট কলেজ কুমিল্লার অহংকার। এই দুইটি না হলে ছেলেমেয়েরা কোথায় যেত? অবিলম্বে প্রতিষ্ঠান দুইটির সংকট দূর করা হোক। এদিকে গত ৭ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, শিক্ষকগণের জোরপূর্বক পদত্যাগ এর পেছনে যাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন আইন ও বিধি বিধান অনযায়ী নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বেতন ভাতা চালু থাকবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।'

জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান শিক্ষকনেতা ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া বলেন,— শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ নেওয়া গ্রহণযোগ্য হবে না। তাঁরা ফিরে আসবেন। তাঁদের বেতন দেওয়ার জন্য চিঠি হয়েছে। যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

Thumbnail image

জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তার ও কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না। তাঁরা বেতন ভাতাও পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠান দুইটি কুমিল্লা শহরের সেরা । কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডেরও সেরা প্রতিষ্ঠান ।

কুমিল্লার নাগরিক সমাজ ও অভিভাবকদের অভিমত, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের নিয়ে বসলেই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণ ফিরে আসবে। শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তার। শুরুতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে। এরপর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদান চলে। প্রতিষ্ঠার পর খুব কম সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি নাম করে। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে, জাতীয় পর্যায়ে ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৭১০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছে। শিক্ষক আছেন ৫৬ জন। এর মধ্যে নিবন্ধনধারী আছেন ৪১ জন। ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতনও বেশি। কলেজ তহবিলে প্রায় ১১ কোটি টাকার মতো আছে। জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। তখন জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে কলেজের চারজন শিক্ষক বিভিন্ন মহল ও শিক্ষার্থীদের কিছু অংশকে যুক্ত করে নার্গিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। গত বছরের ১৮ আগস্ট তিনি সর্বশেষ কলেজে যান। ১৯ আগস্ট তাঁকে নিয়ে জেলা প্রশাসে কর দপ্তরে সভা হয়। ওইদিন বৃষ্টিভেজা রাতে তাঁকে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে বের হওয়ার পর টেনেহিচড়ে কলেজে নেওয়া হয়। এরপর জোরপূর্বক তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেওয়া হয়। নার্গিস এ ঘটনায় উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত তাঁকে যোগদা-ে নর জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে যোগদানে বাধা দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না। আদালতের রায়ও কার্যকর হচ্ছে না।

অভিযোগ উঠেছে, কলেজের চারজন শিক্ষক ও জেলা প্রশাসনের একটি অংশ নার্গিসকে কলেজে যেতে দিচ্ছেন না। এদিকে অধ্যক্ষ কর্মস্থলে যেতে না পারায় জেলা প্রশাসন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও বর্তমানে রাজস্ব ফাহমিদা মুস্তফাকে কলেজের পরিচালক হিসেবে মনোনীত করেন। তিনিই এখন কলেজ চালাচ্ছেন, সঙ্গে একজন সহকারী কমিশনারও আছেন। অন্যদিকে নার্গিস আক্তার আদালতের নির্দেশনার পরেও কয়েকজন শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না।

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার বলেন, 'কুমিল্লা শহরবাসী জানেন, কিভাবে এ পর্যন্ত এই কলেজকে টেনে এনেছি। আমি আদালতের নির্দেশনার পরেও কর্মস্থলে যেতে পারছি না। চারজন শিক্ষক আমাকে যেতে বাধা দিচ্ছেন। তারা মব তৈরি করছেন। জেলা প্রশাসক স্যার চাইলেই আমি কাজে যেতে পারি। প্রতিষ্ঠান তাঁদের। নিরাপত্তা দেওয়াও তাঁদের। '

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) ও বর্তমানে রাজস্ব ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, অধ্যক্ষ না থাকাতে আমি এখন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করছি।' এ প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার সম্প্রতি কুমিল্লা কার্যক্রম শহরের উন্নয়ন আয়োজিত এক মতবিনিময়সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের নিয়ে জবাবে বলেন,' আদালত উনাকে (অধ্যক্ষ নার্গিস) কলেজে যেতে বলেছেন, উনি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে যাচ্ছেন না। আমরা তো বাধা দিচ্ছি না।' এদিকে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের পর কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রভাতী শাখার মো. আবুল কাশেম ও দিবা শাখার রাসেল উদ্দিন মজুমদারও যেতে পারছেন না। কাশেম ৫ আগস্ট থেকে ও রাসেল ৬ আগস্ট থেকে যাচ্ছেন না। প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন ১২ আগস্ট থেকে যাচ্ছেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আন্দোলন হয় কুমিল্লা পুবালী চত্বরে, স্কুলে ও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে। পরে জেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক সৈয়দা রোকেয়া বেগমকে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন। এক পর্যায়ে তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর আরেক সহকারী শিক্ষক নুসরাত জাহান কে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এ কে এম আক্তার হোসেন বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ যোগদান করি। আমি কোন অন্যায় করিনি। কোন কারণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এখন সারাদেশে গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সকল শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তারা যোগদান করেছেন। আমি সুন্দরভাবে স্কুল

চালাচ্ছিলাম। এ বিদ্যালয়ে ১৫২ জন শিক্ষক আছেন। শিক্ষার্থী সাত হাজারের মতো। তহবিলে টাকাও আছে ১৪ কোটি। এসএসসির ফলাফলে কুমিল্লা বোর্ডে জিপিএ৫ এ সবার শীর্ষে। পাসের হারও সন্তোষজনক। গত বছরের আগস্ট থেকে বেতন পাই না। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। বিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রধান শিক্ষকও নেই। এভাবে আর কতোদিন বসে থাকব।

জেলা প্রশাসন চাইলেই আমি বিদ্যালয়ে যেতে পারি।'

প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা নুসরাত জাহান বলেন, আমার ওপর বড় দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করছি টেনশন নিয়ে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, সেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক দুইজন ছাত্র জনতার বিপ্লবের সময় থেকেই উধাও। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছি। বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে।

কুমিল্লার অন্তত পাঁচজন নাগরিক সমাজের ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, জেলা প্রশাসক সবাইকে নিয়ে বসলে বিরাজমান সমস্যার সমাধান এক নিমিষেই হয়ে যাবে। তিনি কুমিল্লা ক্লাব, কুমিল্লা টাউন হল, টাউন হল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীদের জটিল বিষয় সমাধান করেছেন। দুইটি সেরা প্রতিষ্ঠানের সমস্যাও দূর করতে পারবেন। ভালো দুইটি প্রতিষ্ঠান যেন রাজনৈতিক কারণে বা কোন সিন্ডিকেটের কারণে ধ্বংস না হয়। পড়াশোনা ব্যাহত না হয়। মডার্ন হাইস্কুল ও কালেক্টরেট কলেজ কুমিল্লার অহংকার। এই দুইটি না হলে ছেলেমেয়েরা কোথায় যেত? অবিলম্বে প্রতিষ্ঠান দুইটির সংকট দূর করা হোক। এদিকে গত ৭ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব দীপায়ন দাস শুভ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, শিক্ষকগণের জোরপূর্বক পদত্যাগ এর পেছনে যাদের বিরুদ্ধে যৌক্তিক অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন আইন ও বিধি বিধান অনযায়ী নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বেতন ভাতা চালু থাকবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।'

জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান শিক্ষকনেতা ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া বলেন,— শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ নেওয়া গ্রহণযোগ্য হবে না। তাঁরা ফিরে আসবেন। তাঁদের বেতন দেওয়ার জন্য চিঠি হয়েছে। যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি ক্যাডেটদের ব্যান্ড প্রশিক্ষণ কোর্সে সনদ অর্জন

২

ঈদুল আজহার দিন মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির

৩

'মিডিয়ায় অপপ্রচারে'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে মানসিক হেনস্তা করার অভিযোগ

৪

নিয়মিত ২৫ হাজার শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেনি

৫

পানিতে বসে ভর্তি পরীক্ষা দিল শিক্ষার্থীরা

সম্পর্কিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি ক্যাডেটদের ব্যান্ড প্রশিক্ষণ কোর্সে সনদ অর্জন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি ক্যাডেটদের ব্যান্ড প্রশিক্ষণ কোর্সে সনদ অর্জন

৩ দিন আগে
ঈদুল আজহার দিন মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির

ঈদুল আজহার দিন মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির

৪ দিন আগে
'মিডিয়ায় অপপ্রচারে'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে মানসিক হেনস্তা করার অভিযোগ

'মিডিয়ায় অপপ্রচারে'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে মানসিক হেনস্তা করার অভিযোগ

৪ দিন আগে
নিয়মিত ২৫ হাজার শিক্ষার্থী  ফরম পূরণ করেনি

নিয়মিত ২৫ হাজার শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেনি

৪ দিন আগে