মাসুদা বেগম তোফা
আজ মা দিবস।
আমার মা আমার পৃথিবী।
আমার মমতাময়ী মাসহ বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
আমি বলি মাকে ভালোবাসার কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। মা আমার নিত্যকার প্রয়োজনে আয়োজনে একাকার হয়ে থাকেন।মাকে ছাড়া আমাদের চলে না । বেঁচে থাকলে যেমন মরে গেলেও তেমনি মায়ের অস্তিত্ব যেনো ঠিক একই জায়গায় অনুভবে পাই। তবুও একটা নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন আছে। কারণ আমরা সন্তানরা মা বাবাকে বোধহয় তোমাকে ভালোবাসি মা, তোমাকে ভালোবাসি বাবা এই কথাটা সবচেয়ে কম বলে থাকি। মা শুধু আমাদের নিয়ে থাকেন। মা শুধু সন্তানের ভালো মন্দ ভেবে ভেবেই দিন-রাত অতিক্রম করে যায়। মা কখনো তার প্রত্যাশার প্রকাশ করে না, সন্তানই তাদের প্রত্যাশা। তাই একটা দিন অন্তত একটা দিন মায়ের জন্য থাকুক না । ৩৬৫ দিন মা আমাদের কথা ভাবেন, আমরা একটা দিন মাকে নিয়ে একটু ভাবী। মা আমাদের প্রতিদিনের, মা আমাদের অন্তরের। মা আমাদের জীবন। মা আমাদের সকল সুখ দুখ সফলতা ব্যর্থতায় জড়িয়ে থাকেন শর্তহীনভাবে। ভালোবাসা আর নিরাপত্তার ঢাল হয়ে। মায়ের সঙ্গে তো পৃথিবীর কারো সাথেই তুলনা হয় না। গতকালই মেয়েদের বলছিলাম সেই যে ক্লাস অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় মাকে ছেড়ে এসেছি আর জন্মভিটায় ফেরা হয়নি। তারপর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিয়ে, সংসার ও চাকরি। মায়ের প্রেরণা , মায়ের উৎসাহ , সাহস না পেলে হয়তো আজ এখানে আসা অসম্ভব ছিল। কারণ এক বছর বয়সে বাবাকে হারাই, চার বছর বয়সে ভাইকে হারাই। সেই কঠিন বিপর্যয়ের হাত থেকে টেনে নিয়ে আকাশে তুলেছে এই মা। এমন মা কজন আছেন জানি না।এভাবে কজন পারতেন জানি না। সবার কাছেই তার মা শ্রেষ্ঠ তবুও বলতে হয় একটা কঠিন লম্বা জার্নি ছিল আমার মমতাময়ী মায়ের। খুব কাছাকাছি সময়ে স্বামী, একাত্তরে বাবা, একমাত্র পুত্র সন্তান হারানো মা আমার । কীভাবে সব সামলে ওই অল্প বয়সে শুধু পাঁচটি মেয়েকে মানুষ করার লড়াই করে জয়ী হয়েছেন ভাবলেই অবাক হতে হয় । এ এক সংগ্রামী নারীর অসাধারণ উজ্জ্বল গল্প। অসম্ভব সাহসী, দৃঢ় মানসিক শক্তি সম্পন্ন একজন বিধবা নারীর পক্ষে কাজটি সহজ ছিল না। আমার মা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে আমাদের পাঁচবোন, তাঁর নাতিনাতনিদের দেশে সেরা মানুষ হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
আর একান্তভাবে মায়ের কাছে, মায়ের বাড়ি ফেরার সুযোগ হয়নি। বেড়াতে গিয়ে বারবার ফিরে এসেছি আপন ব্যস্ততায়। অথচ মা মনে মনে কত না চাইতো আরেকটা দিন থাকি। চোখ বন্ধ করলে আজও স্পষ্ট দেখি সে দৃশ্য, যতদূর চোখ যায় মা চেয়ে আছে আমার যাত্রা পথে আশীর্বাদ নিয়ে। সময় হারিয়ে মনে হয় কেন আরও বেশি করে মাকে জড়িয়ে রাখতে পারিনি। আজ যখন আমার সন্তান দূরে যাচ্ছে তখন শুধু ভাবছি আমার মায়ের কেমন শূন্য লাগতো। বুকটা কেমন হাহাকার করে উঠে অথচ এই চিরন্তন নিয়ম অস্বীকার করারও উপায় নেই। জীবনকে এগিয়ে নিতে এই শূন্যতার মুখোমুখি হতেই হবে। শুধু পেছনে মা পড়ে থাকবেন একা একবুক আশা ভালোবাসা আর সাহস হয়ে। তাই বলছি আজ যাদের মা বেঁচে আছে তারা সৌভাগ্যবান। মায়ের আশীর্বাদ নাও যত বেশি পার। মা বেঁচে থাকাটাই বড়ো আশীর্বাদ। এরচেয়ে বড়ো আশীর্বাদ আর নাই। মাকে ভালোবাসি আমি মাকে ভালোবাসি।
বড়ো কষ্ট হলো আমার মা নেই ১৫ বছর। বাবা নেই ৫৭ বছর। ভাই নেই ৫৪ বছর
তবুও ভালোবাসাহীন এ জীবন চলছে!
হে আল্লাহ জান্নাতবাসী করো তুমি তাঁদের। সবাই আমার সংগ্রামী রত্নগর্ভা মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
মাসুদা বেগম তোফা: সাবেক অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ,কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ
আজ মা দিবস।
আমার মা আমার পৃথিবী।
আমার মমতাময়ী মাসহ বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
আমি বলি মাকে ভালোবাসার কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। মা আমার নিত্যকার প্রয়োজনে আয়োজনে একাকার হয়ে থাকেন।মাকে ছাড়া আমাদের চলে না । বেঁচে থাকলে যেমন মরে গেলেও তেমনি মায়ের অস্তিত্ব যেনো ঠিক একই জায়গায় অনুভবে পাই। তবুও একটা নির্দিষ্ট দিনের প্রয়োজন আছে। কারণ আমরা সন্তানরা মা বাবাকে বোধহয় তোমাকে ভালোবাসি মা, তোমাকে ভালোবাসি বাবা এই কথাটা সবচেয়ে কম বলে থাকি। মা শুধু আমাদের নিয়ে থাকেন। মা শুধু সন্তানের ভালো মন্দ ভেবে ভেবেই দিন-রাত অতিক্রম করে যায়। মা কখনো তার প্রত্যাশার প্রকাশ করে না, সন্তানই তাদের প্রত্যাশা। তাই একটা দিন অন্তত একটা দিন মায়ের জন্য থাকুক না । ৩৬৫ দিন মা আমাদের কথা ভাবেন, আমরা একটা দিন মাকে নিয়ে একটু ভাবী। মা আমাদের প্রতিদিনের, মা আমাদের অন্তরের। মা আমাদের জীবন। মা আমাদের সকল সুখ দুখ সফলতা ব্যর্থতায় জড়িয়ে থাকেন শর্তহীনভাবে। ভালোবাসা আর নিরাপত্তার ঢাল হয়ে। মায়ের সঙ্গে তো পৃথিবীর কারো সাথেই তুলনা হয় না। গতকালই মেয়েদের বলছিলাম সেই যে ক্লাস অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় মাকে ছেড়ে এসেছি আর জন্মভিটায় ফেরা হয়নি। তারপর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিয়ে, সংসার ও চাকরি। মায়ের প্রেরণা , মায়ের উৎসাহ , সাহস না পেলে হয়তো আজ এখানে আসা অসম্ভব ছিল। কারণ এক বছর বয়সে বাবাকে হারাই, চার বছর বয়সে ভাইকে হারাই। সেই কঠিন বিপর্যয়ের হাত থেকে টেনে নিয়ে আকাশে তুলেছে এই মা। এমন মা কজন আছেন জানি না।এভাবে কজন পারতেন জানি না। সবার কাছেই তার মা শ্রেষ্ঠ তবুও বলতে হয় একটা কঠিন লম্বা জার্নি ছিল আমার মমতাময়ী মায়ের। খুব কাছাকাছি সময়ে স্বামী, একাত্তরে বাবা, একমাত্র পুত্র সন্তান হারানো মা আমার । কীভাবে সব সামলে ওই অল্প বয়সে শুধু পাঁচটি মেয়েকে মানুষ করার লড়াই করে জয়ী হয়েছেন ভাবলেই অবাক হতে হয় । এ এক সংগ্রামী নারীর অসাধারণ উজ্জ্বল গল্প। অসম্ভব সাহসী, দৃঢ় মানসিক শক্তি সম্পন্ন একজন বিধবা নারীর পক্ষে কাজটি সহজ ছিল না। আমার মা সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে আমাদের পাঁচবোন, তাঁর নাতিনাতনিদের দেশে সেরা মানুষ হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
আর একান্তভাবে মায়ের কাছে, মায়ের বাড়ি ফেরার সুযোগ হয়নি। বেড়াতে গিয়ে বারবার ফিরে এসেছি আপন ব্যস্ততায়। অথচ মা মনে মনে কত না চাইতো আরেকটা দিন থাকি। চোখ বন্ধ করলে আজও স্পষ্ট দেখি সে দৃশ্য, যতদূর চোখ যায় মা চেয়ে আছে আমার যাত্রা পথে আশীর্বাদ নিয়ে। সময় হারিয়ে মনে হয় কেন আরও বেশি করে মাকে জড়িয়ে রাখতে পারিনি। আজ যখন আমার সন্তান দূরে যাচ্ছে তখন শুধু ভাবছি আমার মায়ের কেমন শূন্য লাগতো। বুকটা কেমন হাহাকার করে উঠে অথচ এই চিরন্তন নিয়ম অস্বীকার করারও উপায় নেই। জীবনকে এগিয়ে নিতে এই শূন্যতার মুখোমুখি হতেই হবে। শুধু পেছনে মা পড়ে থাকবেন একা একবুক আশা ভালোবাসা আর সাহস হয়ে। তাই বলছি আজ যাদের মা বেঁচে আছে তারা সৌভাগ্যবান। মায়ের আশীর্বাদ নাও যত বেশি পার। মা বেঁচে থাকাটাই বড়ো আশীর্বাদ। এরচেয়ে বড়ো আশীর্বাদ আর নাই। মাকে ভালোবাসি আমি মাকে ভালোবাসি।
বড়ো কষ্ট হলো আমার মা নেই ১৫ বছর। বাবা নেই ৫৭ বছর। ভাই নেই ৫৪ বছর
তবুও ভালোবাসাহীন এ জীবন চলছে!
হে আল্লাহ জান্নাতবাসী করো তুমি তাঁদের। সবাই আমার সংগ্রামী রত্নগর্ভা মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
মাসুদা বেগম তোফা: সাবেক অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ,কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ