• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> মতামত

সংগ্রামী মা ফাহমিদার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১৩: ৩৬
logo

সংগ্রামী মা ফাহমিদার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১৩: ৩৬
Photo

সময়টা ছিল ২০০৪ সালের ৪ অক্টোবর। তখন বড় ছেলে মুহতাদীর রহমানের বয়স ছিল হয় বছর পাঁচ মাস। ছোট ছেলে তাহমিদুর রহমানের বয়স এক বছর ১০ মাস। অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে রেখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওদের বাবা কলেজ অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান। এরপর ওদের মা ৩১ বছর বয়সী ফাহমিদা সিদ্দিক্ াএকাই লড়াই শুরু করেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি টিউশনি করে দুই ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছোট ছেলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

স্থানীয়দের ভাষ্য, সমাজের নানা জনের নানা কথা অপপ্রচার, প্রতিকূলতা মাড়িয়ে টানা ২১ বছর সংগ্রাম করে টিকে আছেন ওই মা। স্বামীর দেওয়া ওয়াদা ও সন্তানদের জন্য নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে তিনি এখন এলাকায় দৃষ্টান্ত। এই মায়ের অনুপ্রেরণাতেই ছেলে দুইটির তরতর করে বেড়ে ওঠা।

আজ রোববার মা দিবস উপলক্ষে সেই সংগ্রামী মায়ের গল্পটা শুনন তাঁর কাছ থেকেই। ... ১৯৯৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তখন আমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। দাম্পত্য জীবনের আট বছরের মধ্যে আমার দুই ছেলে সন্তান হয়। এর মধ্যে আমার স্বামী চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার গুলবাহার আশেক আলী খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। হঠাৎ তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এক পর্যায়ে তিনি ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হন। তাঁর বিয়োগে আমার অবস্থা একেবারেই নাজুক। অবুঝ দুই শিশুকে নিয়ে কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তখন আমি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আমার শ্বশুর বলেছিলেন গ্রামের বাড়ি ফিরে যেতে। আমার বাবা বললেন, কুমিল্লা শহরে চলে আসতে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম স্কুলের কাছেই থাকব। নিজেদের মাথা গোঁজার একটু জায়গা আছে। সেখানে থেকে শিক্ষকতা চালাব। এরপর শুরু হল নতুন সংগ্রামী জীবন। বাসায় টিউশনি শুরু করি। স্কুলের বেতনও পাচ্ছি। এ নিয়ে টেনেটুনে চলে যাচ্ছিল। ছেলে দুইটিকে মানুষ করার জন্য আমার ব্যাকুলতা। এরই মধ্যে নানা জনের নানা টিপ্পনী শুরু হল। একলা মানুষ আমি। কেউ বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কেউ অপপ্রচার করে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। নিরবে সবকিছু সহ্য করেছি। সব কিছু মাড়িয়ে ছেলে দুইটির পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি আমি। তখন আমার শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজির আহমেদ আমাকে ২০ শতক জমি দিলেন ছেলেদের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য। আমি টিউশনি আরও বাড়িয়ে দিলাম। কোনভাবেই জমি বিক্রি করিনি। আমার বাসায় এসে বাচ্চারা পড়তো। কখনো কারও বাসার গিয়ে পড়াইনি। স্বামী মারা যাওয়ার তিন বছরের মধ্যে আমার বাবা কাজী ছিদ্দিকুর রহমান মারা যান।

স্বামীর পর দুই অভিভাবককে হারিয়ে আমি হতবাক। এরপর মনে সাহস সঞ্চয় করি। ছেলেদের পড়াশোনা কোনভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। এভাবে বড় ছেলে এসএসসি, এইচএসসি শেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এখন ছেলেটি সিএসই বিভাগের শিক্ষক। ছোট ছেলে সিএসইতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ২০১৮ সালের ২ জুলাই সহকারী শিক্ষক থেকে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হই। এখন বড় ছেলে উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে যাবে। ছোট ছেলে একই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। নিজের সব চাওয়া বাদ দিয়ে আমার পুরো পৃথিবী জুড়ে এখন দুই ছেলেই । আমি গর্বিত ওদের নিয়ে। ওদের বাবার দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করতে পেরে।'

কী ছিল এমন ওয়াদা? ফাহমিদা ছিদ্দিকা বলেন, মৃত্যুর আগে আমার স্বামী বলেছিলেন তোমাকে আমি কিছু দিতে পারিনি। তোমাকে দুইটি রত্ন দিয়ে গেছি, তুমি ওদের যত্ন করো।' তাঁর সেই কথা আমি রেখেছি ।

ফাহমিদা ছিদ্দিকার বাবার বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভাউকসার গ্রামে। স্বামীর বাড়ি একই উপজেলার অশ্বদিয়া গ্রামে। বর্তমানে তিনি বরুড়া উপজেলার ফলকামূড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ফাহমিদার বড় ছেলে মুহতাদীর রহমান বলেন, “ মায়ের এমন আত্নত্যাগ কখনো ভুলব না। স্বপ্নপূরণে তিনি ছায়ার মতো পাশে আছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ চান্স পেয়েও ভর্তি হতে দেননি। গ্রামের কলেজে তাঁর কাছে রেখে তিনি পড়িয়েছেন। এমন মায়ের সন্তান হিসেবে গর্বিত আমি।'ছোট ছেলে তাহমিদুর রহমান বলেন, ' বাবার কথা আমার মনে নেই। মা-ই আমার চালিকাশক্তি।'

Thumbnail image

সময়টা ছিল ২০০৪ সালের ৪ অক্টোবর। তখন বড় ছেলে মুহতাদীর রহমানের বয়স ছিল হয় বছর পাঁচ মাস। ছোট ছেলে তাহমিদুর রহমানের বয়স এক বছর ১০ মাস। অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে রেখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওদের বাবা কলেজ অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান। এরপর ওদের মা ৩১ বছর বয়সী ফাহমিদা সিদ্দিক্ াএকাই লড়াই শুরু করেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি টিউশনি করে দুই ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছোট ছেলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

স্থানীয়দের ভাষ্য, সমাজের নানা জনের নানা কথা অপপ্রচার, প্রতিকূলতা মাড়িয়ে টানা ২১ বছর সংগ্রাম করে টিকে আছেন ওই মা। স্বামীর দেওয়া ওয়াদা ও সন্তানদের জন্য নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে তিনি এখন এলাকায় দৃষ্টান্ত। এই মায়ের অনুপ্রেরণাতেই ছেলে দুইটির তরতর করে বেড়ে ওঠা।

আজ রোববার মা দিবস উপলক্ষে সেই সংগ্রামী মায়ের গল্পটা শুনন তাঁর কাছ থেকেই। ... ১৯৯৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমানের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তখন আমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। দাম্পত্য জীবনের আট বছরের মধ্যে আমার দুই ছেলে সন্তান হয়। এর মধ্যে আমার স্বামী চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার গুলবাহার আশেক আলী খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। হঠাৎ তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এক পর্যায়ে তিনি ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হন। তাঁর বিয়োগে আমার অবস্থা একেবারেই নাজুক। অবুঝ দুই শিশুকে নিয়ে কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তখন আমি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আমার শ্বশুর বলেছিলেন গ্রামের বাড়ি ফিরে যেতে। আমার বাবা বললেন, কুমিল্লা শহরে চলে আসতে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম স্কুলের কাছেই থাকব। নিজেদের মাথা গোঁজার একটু জায়গা আছে। সেখানে থেকে শিক্ষকতা চালাব। এরপর শুরু হল নতুন সংগ্রামী জীবন। বাসায় টিউশনি শুরু করি। স্কুলের বেতনও পাচ্ছি। এ নিয়ে টেনেটুনে চলে যাচ্ছিল। ছেলে দুইটিকে মানুষ করার জন্য আমার ব্যাকুলতা। এরই মধ্যে নানা জনের নানা টিপ্পনী শুরু হল। একলা মানুষ আমি। কেউ বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কেউ অপপ্রচার করে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। নিরবে সবকিছু সহ্য করেছি। সব কিছু মাড়িয়ে ছেলে দুইটির পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি আমি। তখন আমার শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজির আহমেদ আমাকে ২০ শতক জমি দিলেন ছেলেদের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য। আমি টিউশনি আরও বাড়িয়ে দিলাম। কোনভাবেই জমি বিক্রি করিনি। আমার বাসায় এসে বাচ্চারা পড়তো। কখনো কারও বাসার গিয়ে পড়াইনি। স্বামী মারা যাওয়ার তিন বছরের মধ্যে আমার বাবা কাজী ছিদ্দিকুর রহমান মারা যান।

স্বামীর পর দুই অভিভাবককে হারিয়ে আমি হতবাক। এরপর মনে সাহস সঞ্চয় করি। ছেলেদের পড়াশোনা কোনভাবেই ব্যাহত করা যাবে না। এভাবে বড় ছেলে এসএসসি, এইচএসসি শেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এখন ছেলেটি সিএসই বিভাগের শিক্ষক। ছোট ছেলে সিএসইতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ২০১৮ সালের ২ জুলাই সহকারী শিক্ষক থেকে পদোন্নতি পেয়ে প্রধান শিক্ষক হই। এখন বড় ছেলে উচ্চশিক্ষার্থে দেশের বাইরে যাবে। ছোট ছেলে একই বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। নিজের সব চাওয়া বাদ দিয়ে আমার পুরো পৃথিবী জুড়ে এখন দুই ছেলেই । আমি গর্বিত ওদের নিয়ে। ওদের বাবার দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করতে পেরে।'

কী ছিল এমন ওয়াদা? ফাহমিদা ছিদ্দিকা বলেন, মৃত্যুর আগে আমার স্বামী বলেছিলেন তোমাকে আমি কিছু দিতে পারিনি। তোমাকে দুইটি রত্ন দিয়ে গেছি, তুমি ওদের যত্ন করো।' তাঁর সেই কথা আমি রেখেছি ।

ফাহমিদা ছিদ্দিকার বাবার বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভাউকসার গ্রামে। স্বামীর বাড়ি একই উপজেলার অশ্বদিয়া গ্রামে। বর্তমানে তিনি বরুড়া উপজেলার ফলকামূড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ফাহমিদার বড় ছেলে মুহতাদীর রহমান বলেন, “ মায়ের এমন আত্নত্যাগ কখনো ভুলব না। স্বপ্নপূরণে তিনি ছায়ার মতো পাশে আছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ চান্স পেয়েও ভর্তি হতে দেননি। গ্রামের কলেজে তাঁর কাছে রেখে তিনি পড়িয়েছেন। এমন মায়ের সন্তান হিসেবে গর্বিত আমি।'ছোট ছেলে তাহমিদুর রহমান বলেন, ' বাবার কথা আমার মনে নেই। মা-ই আমার চালিকাশক্তি।'

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

কোন সরকারই পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখেনি

২

কুমিল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস নেই

৩

লালমাই পাহাড়কে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

৪

গরুর বাজারের একাল-সেকাল

৫

জাতীয় ঐক্য ছাড়া নির্বাচন সম্ভব না

সম্পর্কিত

কোন সরকারই পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখেনি

কোন সরকারই পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখেনি

১২ ঘণ্টা আগে
কুমিল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস নেই

কুমিল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস নেই

১৩ ঘণ্টা আগে
লালমাই পাহাড়কে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লালমাই পাহাড়কে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

১৩ ঘণ্টা আগে
গরুর বাজারের একাল-সেকাল

গরুর বাজারের একাল-সেকাল

২ দিন আগে