মাহবুবা রহমান জলি
আমার আম্মা-যেন এক সংগ্রামী নারীর প্রতিচ্ছবি। আম্মা আমার কাছে একজন বিদ্যানুরাগী -বাস্তববাদী নারী,সংসার পরিচালনায় একজন দক্ষ প্রশাসক। আম্মা একজন সংগঠকও বটে।
এসএসসি পাশের পর যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালে আম্মা আব্বার বিয়ে হয়। জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর প্রাক্কালে যে যুদ্ধের সূচনা হয় সেই যুদ্ধ চলে আমৃত্য। কখনো ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা, কখনো স্কুল গড়ে তোলা, সংসার সুন্দরভাবে পরিচালনা, মৃত্যুর আগে নানাবিধ জটিল অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করতে করতে একদিন সকালে যেন শান্তির ঘুম নেমে এলো আম্মার চোখে- ওপারে আম্মা শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকুন।
আব্বা স্কুল শিক্ষক- আমরা চার ভাই বোন। অভাব না থাকলেও জীবনে প্রাচুর্যের চাকচিক্য ছিল না, ছিল না অন্যের ভালো থাকা দেখে নিজেদের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরীর কোন অবকাশ। আম্মা ছোটবেলায় শিখিয়ে দিয়েছেন-তোমরা আদর্শ শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে, সারা জীবন সেটা ধরে রাখবে। বার্ডে তৎকালীন একাডেমী শিশু বিতান স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে কয়েকজন মহীয়সী নারীর সাথে আম্মার অবদানও ছিল অপরিসীম। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আম্মা সেই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি আমাদের চার ভাই বোনকে একটা রুটিনের মধ্যে পরিচালনা করে সময়ানুবর্তিতার শিক্ষা দিয়েছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে স্কুলে যাওয়া, চারজনকে একসাথে গোসল করানো, বড় বওলে করে চারজনকে লোকমা দিয়ে খাইয়ে দেওয়ানো, দুপুরে ঘুম,বিকেলে খেলতে যাওয়া, সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা করে পড়তে বসা-এটা আমাদের প্রতিদিনের রুটিন ছিল। বছরের কখন কোথায় বেড়াতে যাব সেটাও আম্মার প্ল্যানে থাকতো। আমাদের পড়ালেখা ছিল আম্মার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আজ বলতে দ্বিধা নেই আমাদের চার ভাই বোন সবাই আজ স্বাবলম্বী -আপা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রমিজ উদ্দিন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক, তারেক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের কনসালটেন্ট, প্রকৌশলী নাদির এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে কর্মরত, আমি বিআরডিবি তে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আম্মার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ মহিলা অধিদপ্তর কর্তৃক জেলা পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে জয়িতা পদক লাভ করেন।
আম্মা সব সময় চাইতেন নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে। অবসর গ্রহণের পওে ২০০৯ সাল থেকে নিজে সিডিএফ নামে একটা স্কুল পরিচালনা করেন, অসুস্থতার কারণে যখন আর পাচ্ছিলেন না তখন বাধ্য হয়ে স্কুলটি বন্ধ করে দেন। আম্মা যেখানেই আছেন ভালো থাকবেন।
মাহবুবা রহমান জলি: উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, আদর্শ সদও, কুমিল্লা।
আমার আম্মা-যেন এক সংগ্রামী নারীর প্রতিচ্ছবি। আম্মা আমার কাছে একজন বিদ্যানুরাগী -বাস্তববাদী নারী,সংসার পরিচালনায় একজন দক্ষ প্রশাসক। আম্মা একজন সংগঠকও বটে।
এসএসসি পাশের পর যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালে আম্মা আব্বার বিয়ে হয়। জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর প্রাক্কালে যে যুদ্ধের সূচনা হয় সেই যুদ্ধ চলে আমৃত্য। কখনো ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা, কখনো স্কুল গড়ে তোলা, সংসার সুন্দরভাবে পরিচালনা, মৃত্যুর আগে নানাবিধ জটিল অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করতে করতে একদিন সকালে যেন শান্তির ঘুম নেমে এলো আম্মার চোখে- ওপারে আম্মা শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকুন।
আব্বা স্কুল শিক্ষক- আমরা চার ভাই বোন। অভাব না থাকলেও জীবনে প্রাচুর্যের চাকচিক্য ছিল না, ছিল না অন্যের ভালো থাকা দেখে নিজেদের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরীর কোন অবকাশ। আম্মা ছোটবেলায় শিখিয়ে দিয়েছেন-তোমরা আদর্শ শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে, সারা জীবন সেটা ধরে রাখবে। বার্ডে তৎকালীন একাডেমী শিশু বিতান স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে কয়েকজন মহীয়সী নারীর সাথে আম্মার অবদানও ছিল অপরিসীম। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আম্মা সেই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি আমাদের চার ভাই বোনকে একটা রুটিনের মধ্যে পরিচালনা করে সময়ানুবর্তিতার শিক্ষা দিয়েছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে স্কুলে যাওয়া, চারজনকে একসাথে গোসল করানো, বড় বওলে করে চারজনকে লোকমা দিয়ে খাইয়ে দেওয়ানো, দুপুরে ঘুম,বিকেলে খেলতে যাওয়া, সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা করে পড়তে বসা-এটা আমাদের প্রতিদিনের রুটিন ছিল। বছরের কখন কোথায় বেড়াতে যাব সেটাও আম্মার প্ল্যানে থাকতো। আমাদের পড়ালেখা ছিল আম্মার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আজ বলতে দ্বিধা নেই আমাদের চার ভাই বোন সবাই আজ স্বাবলম্বী -আপা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রমিজ উদ্দিন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক, তারেক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের কনসালটেন্ট, প্রকৌশলী নাদির এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকে কর্মরত, আমি বিআরডিবি তে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। আম্মার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ মহিলা অধিদপ্তর কর্তৃক জেলা পর্যায়ে সফল জননী হিসেবে জয়িতা পদক লাভ করেন।
আম্মা সব সময় চাইতেন নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে। অবসর গ্রহণের পওে ২০০৯ সাল থেকে নিজে সিডিএফ নামে একটা স্কুল পরিচালনা করেন, অসুস্থতার কারণে যখন আর পাচ্ছিলেন না তখন বাধ্য হয়ে স্কুলটি বন্ধ করে দেন। আম্মা যেখানেই আছেন ভালো থাকবেন।
মাহবুবা রহমান জলি: উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, আদর্শ সদও, কুমিল্লা।